ঈশ্বরের বিচরণ সর্বত্র। তাই বলে ফুটবল মাঠে এসে দৈববলে নিজের হাতে গোল দিয়ে দেবেন? ব্যাপারটা কেউ হয়তো কল্পনায়ও আনবেন না। যদি না তার নাম ডিয়েগো ম্যারাডোনা না হয়!
চোখ-ধাঁধানো পারফরম্যান্স দিয়ে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ মাতিয়ে রেখেছিলেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত সে আসরের শিরোপাটাও উঠেছিল ম্যারাডোনারই হাতে।
মাঠের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের পাশাপাশি অকল্পনীয় এক বিতর্কের জন্ম দিয়েও স্মরণীয় হয়ে আছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংলিশদের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচেই বিতর্কিত এক গোল করেছিলেন তিনি। যাকে ‘হ্যান্ড অব গড’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। পরে নিজেই সেই গোলের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, ঈশ্বরই তার হাত দিয়ে গোলটা করিয়ে নিয়েছেন! সেই থেকে গোলটির গায়ে পাকাপাকিভাবে বসে যায় ‘ঈশ্বরের হাতের গোল’ উপাধিটি।
ম্যারাডোনা চারটি ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণগোলক জিতেন তিনি। প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ২–১ গোলে জয় লাভ করে। আর্জেন্টিনার পক্ষে উভয় গোলই করেন ম্যারাডোনা। দুইটি গোলই ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে দুইটি ভিন্ন কারণে।
[embedyt] https://www.youtube.com/watch?v=-ccNkksrfls[/embedyt]৩৪ বছর আগে হাত দিয়ে করা ওই গোলটি নিয়ে নানা আলোচনা থাকলেও আক্ষেপ ছিল না আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনার। গত ৩০ অক্টোবর নিজের ৬০ তম জন্মদিন পালন করেছিলেন ফুটবল ঈশ্বর ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনাকে অনেকটা একক প্রচেষ্টায় ‘৮৬ বিশ্বকাপ এনে দেওয়া এই কিংবদন্তির জন্য বিশেষ সংখ্যা বের করেছিল ফ্রেঞ্চ ফুটবল। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ২-১ গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচে দলের দুটি গোলই করেছিলেন ম্যারাডোনা। এর মাঝে প্রথম গোলটিই ইতিহাস বিখ্যাত। যে গোলটি তিনি গোলরক্ষক পিটার শিলটনকে বোকা বানিয়ে বাম হাত দিয়ে সবার চোখের আড়ালে করেছিলেন।
নিজের ৬০ তম জন্মদিনের আগে ফ্রেঞ্চ ফুটবল ম্যারাডোনার কাছে প্রশ্ন রেখেছিল, ‘৬০তম জন্মদিনে কোন উপহার চান?’ এমন প্রশ্নের জবাবে ইংলিশদের সেই পুরনো দুঃখ ফের জাগিয়ে দিয়ে ম্যারাডোনা বলেন, ‘ইংল্যান্ডের জালে আরেকটি গোল করার স্বপ্ন দেখি। এবার ডান হাত দিয়ে।’