যুক্তরাষ্ট্রে এন-৯৫ মাস্কের কারখানা করবে বেক্সিমকো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট শহরে এন-৯৫ মাস্কের একটি কারখানা করবে বাংলাদেশের ওষুধ ও পোশাক খাতের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো। ২০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে এ কারখানা স্থাপন ৯ মাসের মধ্যে শেষ হবে। করোনাভাইরাসের কারণে মাস্ক সংকটে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ব্লুমবার্গ নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্যে জানিয়েছেন বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাভিল হোসাইন।
বেক্সিমকো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের তৈরি করা ৬৫ লাখ পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা সুরক্ষা পোশাক রপ্তানি করছে। ২৫ মে এমিরেটসের একটি উড়োজাহাজে সেই পিপিই গাউনের প্রথম চালান দেশটির উদ্দেশে রওনা হয়। এ সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার। আমেরিকার ফেডারেল ইমারজেন্সি এজেন্সির (এফইএমএ) জন্য দেশটির পোশাকের ব্র্যান্ড হেইনস বাংলাদেশের বেক্সিমকোর কাছ থেকে ৬৫ লাখ পিপিই গাউন কিনেছে।
করোনা প্রতিরোধে নিরাপত্তা সামগ্রীর চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র মাস্ক ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, জাপান, মেক্সিকো এবং কোরিয়া থেকে আমদানি করতে বাধ্য হয়। বেক্সিমকো কার্যত আমেরিকাকে নিশ্চিন্তে শ্বাস ফেলতে সাহায্য করবে। প্রথমে তারা ডেট্রয়েট শহরে, পরে আমেরিকার সব শহরেই মাস্ক সরবরাহ করবে।
বেক্সিমকোর নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাভেদ হোসেইন জানিয়েছেন, বাংলাদেশেও বেক্সিমকো ৩০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে একটি মাস্ক উৎপাদন করার কারখানা গড়ছে। বেক্সিমকো গিলিয়াড সায়েন্সের অ্যান্টি ভাইরাস ওষুধ রেমডিসিভির তৈরি করে এবং সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সরবরাহ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ফ্যাক্টরিটি নির্মাণের জন্য ডেট্রয়েট সিটিতে স্থান নির্বাচনের কাজ চলছে। ডেট্রয়েট খুবই সুবিধাজনক স্থান। এখানকার সিটি কর্তৃপক্ষসহ সরকারি কর্মকর্তাদের আন্তরিক সাপোর্ট পাচ্ছি। ফ্যাক্টরি নির্মাণে ২ কোটি (২০ মিলিয়ন) ডলার বিনিয়োগ করবে বেক্সিমকো। আগামী নয় মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে।’ প্রাথমিকভাবে এন-৯৫ মাস্ক তৈরি করা হবে। পরবর্তীতে সবধরনের পিপিই তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকোর গ্রুপের প্রধান কর্মকর্তা।
সৈয়দ নাভেদ হোসেইন জানান, বেক্সিমকো বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের পোশাক নিউইয়র্ক থেকে প্যারিসে রপ্তানি করছে। এই মহামারির মধ্যেও রপ্তানি অব্যাহত আছে। তিনি আশা করেন, ডেট্রয়েটের প্ল্যান্টটি ৯ মাসের মধ্যে প্রস্তুত হবে। বাংলাদেশে চার মাসের মধ্যেই উৎপাদন শুরু হবে।
ডেট্রয়েটের মেয়র মাইক ডুগান এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি একটি কোম্পানিকে ডেট্রয়েটে জিনস উৎপাদনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ওই কোম্পানি তার অংশিদারকে নিয়ে আসে এবং পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট তৈরি করবে। বেক্সিমকো প্রথমে ডেট্রয়েটে এন-৯৫ মাস্ক উৎপাদন করবে এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা হবে।’
মেয়র জানান, ডেট্রয়েট ইকোনোমিক গ্রোথ করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কেভিন জনসন এবং ডিইজিসি টিম এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন দল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় এটা সম্ভব হয়েছে ।
তিনি বলেন, ‘আমরা পোশাকের কারখানা এখানে আনতে চেয়েছিলাম। গত দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে এই প্রচেষ্টা চলছিল কিন্তু পিপিই কারখানা আসবে ভাবিনি।