ধর্ম ও জীবন

যে বিয়েতে বরকত বেশি

নারী-পুরুষের বিয়ে আল্লাহ তাআলার এক মহা নেয়ামত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত। পরিপূর্ণ ঈমানের অন্যতম আলামত। চারিত্রিক আত্মরক্ষা ও উন্নতির অন্যতম উপায়। আদর্শ পরিবার গঠন ও যুবক-যুবতির চরিত্র গঠনের অনুপম হাতিয়ারওি এটি।

বিয়ে সম্পর্কে কুরআনের বক্তব্য
>> ‘আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম : আয়াত ২১)

>> তারা (স্ত্রীগণ) তোমাদের পোশাক এবং তোমরা (স্বামীগণ) তাদের পোশাকস্বরূপ`। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)

>> তোমাদের মধ্যে যারা বিয়েহীন, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছলতা দান করবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা বিয়ে করতে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন। (সুরা নুর : আয়াত ৩২-৩৩)

তাইতো ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী যথাযথ কারণ ছাড়া বিয়েবিহীন থাকার কোনো সুযোগ নেই। নারী-পুরুষ যতক্ষণ পর্যন্ত বিবাহ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মুসলমানও হতে পারে না। হাদিসে এসেছে-
‘যখন কোনো বান্দা বিয়ে করলো তখন সে তার ঈমানের অর্ধাংশ পূর্ণ করল। (মিশকাত)

তাছাড়া বিয়ে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম সুন্নাত। হাদিস শরীফে বিশ্বনবি সাঃ বলেন-
‘বিয়ে হলো আমার সুন্নাত। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত তরিকা ছেড়ে দেবে, সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি)

সবচেয়ে বেশি বরকতের বিয়ে
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিয়েতে অযথা অতিরিক্ত খরচে নিরুৎসাহিত করেছেন। অতিরিক্তি খরচের বিয়ে বরকতহীন। বিয়েতে কীভাবে বরকত ও সমৃদ্ধি আসবে, সে ব্যাপারে হাদিসে পাকে সুস্পষ্ট বক্তব্য এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ওই বিয়ে সবচেয়ে বেশি বরকত হয়, যে বিয়েতে ব্যয় বা খরচ কম হয়।’ (বায়হাকি)

বর্তমান সময়ের বিয়েগুলোর দিকে লক্ষ্য করলেই দেখা যায়, বেহুদা বা অনর্থক খরচাদিতে পরিপূর্ণ। যা দিয়ে সমাজের অনেক কল্যাণকর কাজ করা যায়।

বিয়ের অতিরিক্ত খরচ ও চাহিদার কারণে অনেক স্থানে পারিবারিক অশান্তি ও অকল্যাণ বয়ে আনে। যা ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়।

সুতরাং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা অনুযায়ী বিয়েতে যতটুকু খরচ না করলেই নয়, ঠিক সে পরিমাণ ব্যয় করার মাধ্যমে বিয়েতে সবচেয়ে বেশি কল্যাণ ও বরকত অর্জন করা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিয়ের খরচ বা ব্যয়ের ক্ষেত্রে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। অযথা খরচ থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + nineteen =

Back to top button