অপরাধ ও দূর্ঘটনা

রংপুরের হারাগাছে পুলিশের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ, আহত অর্ধ শতাধিক

রংপুরের হারাগাছ মেট্রোপলিটন এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলাম ওরফে গলাকাটা তাজুল (৫৫) নামে এক আসামির মৃত্যুর অভিযোগে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ধ্যায় মেট্রোপলিটনের হারাগাছ থানা ঘেরাও করে ব্যাপক ভাংচুর করে।

সোমবার সন্ধ্যায় হারাগাছ পৌরসভার নতুন বাজার বছিবানিয়ার তেপতী নাম স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ, টিয়ালশেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করে। হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানা এলাকা থেকে সংঘর্ষ প্রায় অর্ধ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে রিজার্ভ দাঙ্গা পুলিশ চাওয়া হলে সেখানে পুলিশের গাড়ি পৌঁছালে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালালে সংঘর্ষ আরও বেড়ে যায়।

এই সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক ও হামলাকারীদের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৫ জনকে স্থানীয় ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর নিয়ে নানা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার কারণে সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

নিহত তাজুল ইসলাম ওরফে গলাকাটা তাজুল ওই কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ থানার দালালহাট নয়াটারি গ্রামের মৃত শওকত আলীর ছেলে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হারাগাছ পৌরসভার নতুন বাজার বছিবানিয়ার তেপতি নামক স্থানে মাদক দ্রব্যসহ তাজুল ইসলাম ওরফে গলাকাটা তাজুলকে আটক করে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার একদল পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সে পালিয়ে যেতে দৌড় দিলে পুলিশ তাকে আটক করতে গিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ী আহত হয় বলে পুলিশের দাবি।

অপর দিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে পুলিশ ওই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করার সময় ব্যাপক মারধোর করলে সে ঘটনাস্থলে অচেতন হয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ হেফাজতে সে মারা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে উত্তেজনাকর খবর ছড়িয়ে পড়লে হারাগাছ মেট্রোপলিটন থানার বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে উত্তেজিত লোকজন লাঠি সোডা ও ইট পাথর নিয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা চালায়। প্রথমে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ৪টি যানবাহন ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়।

এ সময় থানার প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে থানা পুলিশ টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে অতিরিক্ত পুলিশে চেয়ে বার্তা পাঠালে সেখানে রিজার্ভ দাঙ্গা পুলিশের গাড়ি গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। গভীর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × two =

Back to top button