রপ্তানি আয় বেড়েছে মহামারিতেও
করোনা মহামারিকালে রপ্তানি আয়ে বড় উল্লম্ফন নিয়ে শেষ হলো ২০২০-২১ অর্থবছর। গত ৩০ জুন শেষ হওয়া এই অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ (৩৮.৭৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ১৫.১০ শতাংশ বেশি।
সর্বশেষ জুন মাসে ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ৩১.৭৭ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক, পাট ও পাটপণ্য, চামড়া ও চামড়াপণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক পণ্য, রাসায়নিক পণ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফেরার কারণেই সার্বিকভাবে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এই অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। আয় হয়েছে ৩৮.৭৬ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে ৫.৪৭ শতাংশ।
২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় কম ছিল ২৬ শতাংশ। তার আগের বছর (২০১৮-১৯) রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য।
মূলত তৈরি পোশাক এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ার কারণেই সার্বিক রপ্তানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত অর্থবছরে।
তবে লক্ষ্যের চেয়ে ৬.৮৯ শতাংশ পিছিয়ে আছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ১৪৫ কোটি ৬৭ লাখ (৩১.৪৫ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের চেয়ে ১২.৫৫ শতাংশ বেশি।
নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে সবচেয়ে বেশি; ১ হাজার ৬৯৬ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ শতাংশ। ওভেন পোশাকে থেকে এসেছে ১ হাজার ৪৪৯ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। বেড়েছে ৩.২৪ শতাংশ।
এই অর্থবছরে ১১৬ কোটি ১৯ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের চেয়ে ৩১.৬৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ১১৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯.১৭ শতাংশ।
বেশ কয়েক বছর পর চামড়া রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধিতে ফিরেছে বাংলাদেশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ৯৪ কোটি ১৬ লাখ ডলার আয় হয়েছে; প্রবৃদ্ধির অঙ্ক ১৮.০৬ শতাংশ। এ সময়ে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ২৪.৪৭ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪.৬৮ শতাংশ। হিমায়িত মাছ রপ্তানি বেড়েছে ৪.৬৫ শতাংশ।
তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “আমাদের পোশাকের বড় বাজার ইউরোপ-আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। মানুষজন আগের মতো কেনাকাটা শুরু করেছে। সে কারণেই মোটামুটি একটা ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়েছে”।