সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭টি ঘর রাতের আঁধারে ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতে ঘরগুলো গায়েব করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভাঙা ঘরের অবশিষ্ট জিনিসপত্র ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের তৈলকুপি গ্রামে পাঁচ দিন আগে রাতের আঁধারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন মানুষদের জন্য এসব ঘর তৈরি করা হয়। এর প্রতিটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। হতদরিদ্র ও অসহায়দের জন্য এসব বানানো হলেও তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার আগে এসব ঘর ভেঙে ফেলা হয়।
লাঙলঝাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, রাতের আঁধারে অনেক লোকজন এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) মেশিন দিয়ে ঘর ভাঙা শুরু করে। ট্রাকে করে ঘরের ইটসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে চলে যায়।
তা ছাড়া জানালা-দরজাগুলো অন্য একটি ঘরের মধ্যে রেখেছে। ইউএনও স্যারকে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার, কী হচ্ছে? তখন স্যার জানালেন, এসব ঘরে লোকজন তুলে দিলে প্রাণহানির ভয় আছে। তাই ঘরগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এক সপ্তাহ আগে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাতের আঁধারে তৈলকুপি গ্রামের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বুলডোজার লাগিয়ে ভেঙে ফেলেন। রাতের মধ্যেই ইটসহ বিভিন্ন মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতেই এ কাজ করা হয়েছে।
পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু
তিনি আরও বলেন, নতুন ঘর করা হলো। কাউকে ঘরে তোলার আগেই ভেঙে গেলে। লজ্জাজনক ব্যাপার। এ জন্য ঘরগুলো রাতের আঁধারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এখন যে ঘরগুলো আছে, সেগুলোর নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোবায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, উপকারভোগীদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘর ভাঙা হয়েছে। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সময়ে এ ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, তৈলকুপি গ্রামে ১৪টি ঘর নির্মাণ করা হয় পুকুরের পাড়ে। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সদ্য বদলিকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমি জেরিন কান্তা ঘরগুলো নির্মাণ করেন। অল্প দিনের মধ্যেই ঘরগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পুকুর ভরাটের জন্য আরও ছয় লাখ টাকা খরচ করেন উপজেলা অফিস থেকে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, এক সপ্তাহ আগে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাতের আঁধারে তৈলকুপি গ্রামের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বুলডোজার লাগিয়ে ভেঙে ফেলেন। রাতের মধ্যেই ইটসহ বিভিন্ন মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতেই এ কাজ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২-এর প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, ঢাকা থেকে তদন্ত করতে পরিদর্শক দল ওই এলাকায় যাবে। কোনো অনিয়ম হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।