‘রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত’
রাশিয়ার গামেলেয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজির সামরিক বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা মিলে যে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন, সেটি ব্যবহারের জন্য ‘প্রস্তুত’ বলে দাবি করেছেন রুশ ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুসলান সালিকভ।
রুশ সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসজনিত কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভ্যাকসিনটি দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। যাদের ওপর ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে, তাদের প্রত্যেকেই সম্পূর্ণ সুস্থ বোধ করছে এবং প্রত্যেকের শরীরেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।
রুশ সংবাদমাধ্যমকে সালিকভ বলেন, ‘আমাদের ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলের ওপর চূড়ান্ত মূল্যায়ন ইতোমধ্যেই হয়েছে। ছেড়ে দেওয়ার সময় সব স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। তারা একেবারে স্বাভাবিক। একটিও ব্যতিক্রম ঘটনা নেই। সুতরাং নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রথম ঘরোয়া ভ্যাকসিনটি প্রস্তুত।’
তবে একাধিক গণমাধ্যম প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কবে থেকে তৃতীয় পর্যায়ে ব্যাপক মাত্রায় রাশিয়ার ভ্যাকসিনটির ট্রায়াল হবে বা গণহারে ভ্যাকসিনটির উত্পাদন শুরু হবে, তা জানাননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এদিকে ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থার খবর, এক বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভ্যাকসিনের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বলে জানিয়েছে। এদিকে, রুশ সরকারি ভাইরোলজি সেন্টার ভেক্টরের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা সের্গেই নেতেসভ বলেছেন, ভ্যাকসিনের তৃতীয় দফা ট্রায়াল এখনো শুরু হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঘোষণাও দেওয়া হয়নি। ভেক্টরও একটি ভ্যাকসিনের ওপর কাজ করছে। নেতেসভ বলেছেন, ‘ওরা সবাই সবার আগে থাকতে চাইছে।’
সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, গত জুন মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রিসার্চ ইনস্টিটিউট ৪৮-এর সঙ্গে যৌথভাবে গামেলেয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজির তৈরি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ছাড়পত্র দেয়।
রুশ ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, সেনাবাহিনী মস্কোর সরকার পরিচালিত গামেলেয়া ইনস্টিটিউট ও রুশ ডিরেক্টরেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করছে। রাশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কয়েক হাজার মানুষের ওপর তৃতীয় দফার ট্রায়াল শুরু হবে আগামী ৩ আগস্ট। ভ্যাকসিনের বিলিবণ্টন আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে পারে।
রাশিয়া বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যার হিসাবে চতুর্থ স্থানে আছে।