জাতীয়

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ২ বছর পূর্তি; প্রত্যাবাসনে কঠোর অবস্থানের প্রত্যয়

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল অনুপ্রবেশের দুই বছর পূর্ণ হলো রবিবার। রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম দমন অভিযানের কারণে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাধ্য হয়ে নিজ দেশ ছেড়ে এদেশে পালিয়ে আসে।

সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের হত্যা করে, গ্রামের অসংখ্য ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়, ব্যাপক যৌন সহিংসতা চালায়। ফলে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বর্বর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করে। পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে। ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের আগে যাচাইয়ের জন্য ২৯ জুলাই ছয় হাজার পরিবারের ২৫ হাজার রোহিঙ্গার নতুন একটি তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পেয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার কথা ছিল গত বছরের ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। দ্বিতীয়বারের মতো এমন পদক্ষেপ নেয়া হয় গত ২২ আগস্ট। কিন্তু ব্যাপক প্রস্তুতির পরও রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে সেটাও আটকে যায়।

রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরে না যাওয়ার জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সম্প্রতি বলেন, ‘মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থা তৈরি করতে পারেনি। যে কারণে তারা ফিরতে রাজি হচ্ছে না। তবে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। তাদের আমরা বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াতেও পারব না। তাদের ফিরে যেতে হবে।’

রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থান নেবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের বৃহত্তর শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বিশ্ব নেতৃত্বকে এ সমস্যা অবশ্যই দ্রুত সমাধান করতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্বকে আরও উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি এ সংকটের সমাধান খুঁজে বের করতে বিশ্ব নেতৃত্বকে আহ্বান জানান।

ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ জোর করে কিছু করতে চায় না। সেই সাথে তিনি মাতৃভূমিতে ফিরতে না চাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থার ঘাটতি দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। খবর ইউএনবি’র।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − six =

Back to top button