আন্তর্জাতিককরোনাভাইরাস

লকডাউনের মধ্যেই মুম্বাইয়ের রাস্তায় হাজার হাজার শ্রমিক

ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই দেশটির নানা প্রান্তে অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের ঘরে ফেরানোর দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু করেছেন। দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় হাজার হাজার শ্রমিকের জমায়েতকে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করেছে। গুজরাটের সুরাটেও অভিবাসী শ্রমিকদের বিক্ষোভ সহিংস আকার নিয়েছে।

এদিকে দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপি যদিও দাবি করছে, এ সব বিক্ষোভের পেছনে কোনো কোনো মহলের উসকানি বা ষড়যন্ত্র আছে। অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, এই শ্রমিকদের এখনই নিরাপদে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা না-করলে আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে, খবর এনডিটিভি।

বাড়ি ফেরার জন্যে মহারাষ্ট্রে আটকে পড়া শ্রমিকদের উস্কে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে। লকডাউনের সময় অশান্তি ছড়ানোয় মদত দেওয়ার অভিযোগে শ্রমিক নেতা বিনয় দুবেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধায় রীতিমতো অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা স্টেশন চত্বর।

বস্তুত মুম্বাইয়ের শহরতলি বান্দ্রায় মঙ্গলবার বিকেলে যেভাবে ভিন রাজ্যের হাজার হাজার শ্রমিক একটি রেল স্টেশনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তা সরকারের জন্য অবশ্যই একটা বড় অশনি সংকেত। প্রথম দফার লকডাউন মিটলেই সরকার তাদের গাঁয়ে ফেরানোর জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করবে; এই গুজব শুনেই তারা দলে দলে স্টেশনে এসে জড়ো হন।

ওই শ্রমিকরা জানান, তারা প্রায় সবাই ছিলেন উত্তর প্রদেশ বা বিহারের লোক। তারা সবাই কোথায় থেকে উড়ো খবর শুনেছিলেন; তাদের বাড়ি ফেরানোর জন্য না কি ট্রেনের ব্যবস্থা হচ্ছে। সে জন্যই বান্দ্রায় হঠাৎ এত ভিড় হয়েছিল।

তাদের মুখে ছিল একটাই কথা- বাড়ি গেলে অন্তত দুটো তো খেতে পাব, এখানে তো না খেতে পেয়ে মরার দশা! মুম্বাইয়ে সরকার যে চাল-ডালের ব্যবস্থা করেছে তা কিন্তু লোকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছাচ্ছে না। যারা এগুলো বন্টনের দায়িত্বে, তারাই এর অর্ধেক সরিয়ে ফেলছেন।

মুম্বাইয়ের অসংখ্য অভিবাসী শ্রমিকের সঙ্গে এই সঙ্কটে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মানবাধিকার কর্মী ও অ্যাক্টিভিস্ট কবিতা কৃষ্ণন। তিনি বলেন, তারা কিন্তু শুধু করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ক্যারিয়ার নন, এখানে মানবিক দিকটাও দেখতে হবে। তারা এমন কিছু অসহায় মানুষ যারা পরিবারের কাছে ফিরতে মরিয়া। শহরে তারা শখ করে আসেননি, আর শহরে যখন কোনও রোজগার নেই তখন তাদের এক মুহুর্তও সেখানে থাকা বিলাসিতা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen + 9 =

Back to top button