জনপ্রিয়তায় বাংলাদেশে ক্রিকেটের ধারেকাছে কিছু নেই। স্বভাবতই জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক অনেক বড় পদ। এর ভার ও সম্মানই আলাদা। এটি অনেকটা বিশেষ দূতের মতো।
কিন্তু অন্য ধাতুতে গড়া মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাকে তা খুব একটা স্পর্শ করেনি। অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণার সময় বললেন, দায়িত্ব পেয়ে কেবল প্রয়োগ নিয়েই ভেবেছেন তিনি। এর নির্যাস ছুঁতে যাননি কখনই।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ব্যানারে নির্বাচিত হন মাশরাফি। তিনি এখন একজন আইনপ্রণেতা। চাইলে বাড়ি, গাড়ি– সবই করতে পারেন ম্যাশ। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও একই মতাদর্শ ধারণ করেন তিনি।
২০১৪ সাল থেকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভার বইছেন মাশরাফি। ২০১৭ সালে অবসর নেন টি-টোয়েন্টি থেকে। এর পর খেলছেন কেবল ওয়ানডে। ওডিআই, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে তিনটি বিশ্বকাপে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এতসব কিছু পেছনে ফেলে বৃহস্পতিবার সরে গেলেন অধিনায়কত্ব থেকে।
শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ দিয়ে ক্যারিয়ারের নেতৃত্বের ইতি টানছেন তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার ম্যাচপূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে নড়াইল এক্সপ্রেস বলেন, ক্ষমতা চর্চা থেকে বরাবরই দূরে থেকেছি আমি। অধিনায়কত্ব যখন শুরু করেছি, তখন তা অনুভব করিনি। যখন অধিনায়ক হয়েছি, তখনও এটি অনুভব করিনি।
তিনি যোগ করেন, আবার এখন আমার আরেকটা পরিচয় আছে আমি এমপি। এটিও অনুভব করি না। লাল পাসপোর্ট নিইনি (সরকারি পাসপোর্ট), বাড়ি নিইনি, গাড়ি নিইনি। আমি আসলে এসব থেকে সবসময়ই দূরে থাকতেই পছন্দ করি। এসব এড়িয়ে থাকাটা ভালো মনে করি।
মাশরাফির কাছে দলনায়কের চেয়ারটার মূল্য ছিল কাজের দায়িত্বে। এটি ব্যবহার করে কখনই প্রভাব খাটাতে চাননি তিনি। ডানহাতি পেসার বলেন, যখন আমি এ চেয়ারটা পেলাম। তখনই ওখানে শেষ লেখা হয়ে গেছে। এটি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার কাছে ছিল না। এর সর্বোচ্চ প্রয়োগ আমার করা উচিত। এটার প্রভাবটা আমি অন্যভাবে খাটাতে চাইনি।
তিনি বলেন, আমি বিষয়টা এভাবে দেখি– যা আমি অর্জন করব বা করলাম, এরপর সেটার মূল্য আর নেই। তখন মূল্যায়ন হবে আমি কীভাবে ওটার প্রয়োগ করেছি।