লিবিয়ার সেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কী বর্ণনা দিলেন বেঁচে যাওয়া সাইদুল?
ডিসেম্বরের দিকে ভারত হয়ে লিবিয়া যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের সাইদুল ইসলাম। তাঁর ইচ্ছা ছিল, কয়েক মাস লিবিয়ায় থেকে সুযোগ বুঝে ইতালি যাবেন জীবিকার জন্য।
মানবপাচারকারীদের হাত থেকে দফায় দফায় অপহরণকারীদের হাতে পড়ে সঙ্গীদের নির্মম মৃত্যুর সাক্ষী হয়েছেন তিনি। দুই দিন আগের দুর্বিষহ স্মৃতি এখনো তাঁকে তাড়িয়ে ফিরছে। কত দ্রুত আপনজনের কাছে ফিরবেন, সেটাই এখন ২২ বছর বয়সী এ তরুণের একমাত্র চাওয়া।
আজ শনিবার দুপুরে একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে মুঠোফোনে এ চাওয়ার কথা জানালেন ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশ পাড়ি দেওয়া সাইদুল ইসলাম।
সাইদুল জানালেন, লিবিয়া পৌঁছানোর পর বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাত বদল করে পাচারকারীরা। এরপর তাঁদের জিম্মি করে স্থানীয় অপহরণকারীরা। ওই অপহরণকারীরা টাকার জন্য লোকজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। এমনি এক ঘটনায় বাংলাদেশ ও সুদানের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে অপহরণকারীদের হোতাদের। এরই জেরে বাংলাদেশ ও সুদানের ৩০ নাগরিক প্রাণ হারান অপহরণকারীদের গুলিতে।
লিবিয়ার মিজদা শহরে সেখানকার অপহরণকারীরা গত বৃহস্পতিবার এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ২৬ বাংলাদেশি ও ৪ সুদানিকে হত্যা করে। আহত করে অন্য ১১ বাংলাদেশিকে। ঘটনাস্থলে থাকা ৩৮ বাংলাদেশির মধ্যে অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান সাইদুল।
যদিও এক সারিতে দাঁড় করিয়ে অপহরণকারীরা পৈশাচিক উল্লাসে গুলি চালায় সবার ওপর। বেঁচে যাওয়ার পর গত দুই দিন লিবিয়ার স্থানীয় এক নাগরিকের জিম্মায় ছিলেন সাইদুল।
মাত্র দুই দিন আগে অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে যান সাইদুল ইসলাম। চোখের সামনেই নিজের দেশের ২৬ জনের নিহত আর অন্য ১১ জনের আহত হওয়ার দৃশ্য ভুলতে পারছেন না তিনি। তাই মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যাওয়া সাইদুল আজ দুপুরেও স্বাভাবিক হতে পারেননি। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বারবার থমকে গেছেন।