কূটনীতিজাতীয়

লিবিয়ায় আহত ১১ বাংলাদেশীর মধ্যে ৬ জন সম্পূর্ণ সুস্থ

ধারণা করা হচ্ছে ৩৮ হতভাগ্য বাংলাদেশি তিন মাস আগে লিবিয়া পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

শুক্রবার (২৯ মে) এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আহত ১১ জনের মধ্যে ছয় জন এখন সম্পূর্ণ সুস্থ এবং বাকি পাঁচ জনের অবস্থা সঙ্গিন।’ এদের মধ্যে তিন জনের অপারেশন হয়েছে এবং বাকি দুই জনেরও অপারেশন হবে বলে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এরা বেশ অসুবিধার মধ্যে আছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আহতদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় বুলেট লেগেছে এবং সেগুলো বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

লিবিয়ায় বাংলাদেশ মিশন ত্রিপলি মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘লিবিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আমাদের সহায়তা করছে।’

মৃতদেহগুলো মিজদাহ শহরে একটি হাসপাতালের মর্গে আছে এবং আমরা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে অনুরোধ করেছি তাদের একটা ব্যবস্থা করার জন্য বলে জানান মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের মিশন লিবিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে জানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি করেছি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এবং দোষী ব্যক্তিদের তথ্য আমাদের দেওয়ার জন্য।’

যে ছয় জন সুস্থ আছেন আমরা আজকে তাদের সঙ্গে কথা বলে নিহত বাংলাদেশিদের পরিচয় জানবো এবং তারা কোন পাচারকারীর মাধ্যমে গেছেন, সেটিও জানতে পারবো বলে জানান মন্ত্রী।

পাচারকারীরা এখনও সক্রিয় আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবির পরে ১৬ জন বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি আমাদের জানিয়েছিল বাংলাদেশের পাচারকারী কারা, কোন ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে গিয়েছিল, সেই তথ্য দিয়েছিল। আমরা কিছু গ্রেফতারও করেছিলাম।’

লিবিয়ার এ ঘটনায় যেসব বাংলাদেশি বেঁচে আছেন, তাদের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে মূল ঘটনাটা হচ্ছে— তারা ৮ থেকে ১০ হাজার ডলার খরচ করে গিয়েছিল। কিন্তু পাচারকারী দল আরও টাকা চাচ্ছিল এবং অত্যাচার করছিল। তারা টাকা দিতে চাননি। তাদের মধ্যে ঝগড়ার সময়ে একজন আফ্রিকান লোক তাদের প্রধান পাচারকারীকে মেরে ফেলে।’

ওই পাচারকারী মারা যাওয়ার পর তার পরিবার ও অন্যরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ফলে আমাদের ২৬ জন ভাই মারা যান বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি ত্রিপোলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে ঘটেছে। পাচারকারীরা ওই বাংলাদেশিদের ইতালি পাঠানোর জন্য সাগরে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মিজদাহ শহরটি এক সপ্তাহ আগে ত্রিপোলি সরকার দখল করেছে। আগে এটি হাফতারপন্থীদের দখলে ছিল। সে কারণে এখন কার্যত সেখানে কোনও প্রশাসনিক দখল ব্যবস্থা নেই। সেখানে এখনও মিলিশিয়াদের রাজত্ব। ফলে অপরাধীদের ধরে এনে কখন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে সেটি আমরা জানি না।’

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তবে লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের গ্রেফতার ও শাস্তি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen + 3 =

Back to top button