Lead Newsধর্ম ও জীবন

শেষ হলো পবিত্র হজ, খুতবায় করোনা থেকে মুক্তি ও বিশ্বশান্তি কামনা

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠিত হলো পবিত্র হজ। আজ বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সম্পন্ন হলো পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা।

সাদা ইহরাম পরিহিত সীমিত সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি জোহর ও আসরের নামাজ এক আযান ও দুই ইকামতে আদায় করেন। আর আজকের এ দিনটিকে বলা হয় ‘আরাফাত দিবস’।

এদিন হাজারো মুসল্লির কণ্ঠে উচ্চারিত হয় সেই ধ্বনি ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শরিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ানিন মাতা লাকাওয়ালমুলক লা শারিকালাক।’

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই, ৯ জিলহজ) স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় সালাম দিয়ে হজের খুতবা শুরু করেন নতুন খতিব শায়খ আবদুল্লাহ বিন সোলায়মান আল মানিয়া। খুতবার শুরুতে তিনি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করেন। খুতবায় তিনি বৈশ্বিক মহামারি থেকে মুক্তি, গোনাহ মাফ, আল্লাহর রহমত কামনাসহ সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।

খুতবায় মানুষের অধিকার; বিশেষ করে নারীর অধিকার ও উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। সেই সঙ্গে ওয়াদা পালন, মাতা-পিতার সেবা, সৎকাজের আদেশ, অসৎকাজের নিষেধ, মানবসেবা, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় নাগরিকদের সচেতন হওয়ার কথা বলেন।

শায়খ সোলায়মান খুতবায় কুরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মানুষকে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানান। ইবাদত-বন্দেগির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। আরাফাতের ময়দানে করণীয়সহ হজের পরবর্তী বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

নামাজ, পবিত্রতা অর্জন, রোগীর সেবা, মহামারি উপদ্রুত এলাকায় প্রবেশ না করা এবং ওইসব এলাকা থেকে অন্যত্র না যাওয়ার কথা বলেন। লিখিত খুতবায় তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে সৌদি সরকারের গৃহীত হজের নানা পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, খুব দ্রুত বৈশ্বিক এ মহামারি কেটে যাবে। আবার আগের মতো হজ ও উমরা যাত্রীদের আগমনে মুখরিত হবে পবিত্র এই ভূমি।

৩০ মিনিটের খুতবার শেষাংশে সৌদি সরকারের জন্য দোয়া ও বিশ্বে শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করেন খতিব। রোগমুক্তির জন্যও দোয়া করেন। করোনাকে মহামারি উল্লেখ করে, এর থেকে বিশ্ববাসীর হেফাজতের জন্য দোয়া করেন। সর্বাবস্থায় আল্লাহর দরবারে যাবতীয় সমস্যার জন্য বেশি বেশি দোয়া করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

খুতবা শেষে জোহরের নামাজের আজান দেওয়া হয়। আজান দেন মসজিদে হারামের মুয়াজ্জিন শায়খ ইমাদ বিন আলি ইসমাইল। এরপর খতিব উপস্থিত হাজিদের নিয়ে দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন।

এ বছর হজের আরবি খুতবা অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও অনুবাদ করে সম্প্রচার করা হয়। দুটি সম্প্রচার মাধ্যমে হজের খুতবা ১০টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হয়। বাংলা ছাড়াও বাকি নয়টি ভাষা হলো- ইংরেজি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, ফ্রেঞ্চ, মান্দারিন, তুর্কি, রুশ ও হাবশি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + 16 =

Back to top button