‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনসহ’ পাঁচ দফা দাবিতে শাহবাগ অবরোধ
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ পাশ ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন।
এসব দাবিতে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। অবরোধের কারণে শাহবাগ সংলগ্ন সকল সড়কে যানজট দেখা দেয়। সন্ধ্যার দিকে একটি মশাল মিছিলের মাধ্যমে তারা অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেন।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের ডাকে কর্মসূচিতে জাগো হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ, ইন্টারন্যাশনাল শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশনসহ বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। অবরোধ কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, আমাদের অন্যতম দাবি হিন্দু সুরক্ষা আইন করা। এ আইনটির জন্য সাইবার ক্রাইমের মতো বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হবে। যখন কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে আমাদের ওপর হামলা করবে তখন এই আইনে তাদের বিচার করতে হবে।
অবরোধ কর্মসূচিতে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা সম্প্রতি পবিত্র কুরআন শরিফ অবমাননাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এসময় তারা এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ পাশ ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করার দাবিও জানান।
এরআগে সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সারাদেশে মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হিন্দুদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে সংগঠনগুলো।
সমাবেশে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার, ভাঙচুর, হত্যা ও হামলা করা হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সরকার ও প্রশাসন ঘটনা ঘটার পর ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এই হামলার বিচার চাই। এর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না। আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। এসময় তারা শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শাহবাগে প্রতীকি অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তাপস পাল, জাতীয় হিন্দু ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় প্রমুখ।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ৬০টি সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ করাসহ একজন উপ-রাষ্ট্রপতি ও একজন উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করা, দখলকৃত সকল দেবোত্তর সম্পত্তি স্ব-স্ব মঠ ও মন্দির হস্তান্তরসহ উদ্ধারকৃত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা জাদুঘরের পরিবর্তে মঠ-মন্দিরের কাছে ফেরত প্রদান করা, সরকারি চাকরিতে ২০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি চালুসহ হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের জন্য সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি দেওয়াসহ নিন্ম মাধ্যমিক পর্যায়ে সংস্কৃত শিক্ষা পুনরায় চালু করা।