দেশবাংলা

সারাদিনই দৌলতদিয়ায় ছিল ঢাকাগামী যাত্রীর চাপ

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ ফিরতে শুরু করেছেন কর্মস্থলে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই ব্যাক্তিগত গাড়ি ও বিভিন্ন উপায়ে আসা জনস্রোত শুরু হয়েছে দৌলতদিয়া ঘাটে।

এই ভিড় সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলকারী সব ফেরি চালু করেছে।

জানা যায়, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন ধরে সীমিত আকারে ফেরি সার্ভিস চালু রাখে কর্তৃপক্ষ। এম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন পারাপারে ২ থেকে ৫টি ফেরি চালু রাখা হয়।

কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে বাড়তে থাকে ঢাকাগামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। সময় বাড়ার সাথে সাথে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে কর্মজীবী হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার দুপুর থেকে নৌরুটের সব ফেরি চালু করে।

দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা ভেঙে ভেঙে সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছেন।

গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে ওই সব ছোট গাড়ির চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন। করোনা প্রতিরোধে করণীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে হাজার হাজার যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।

সাতক্ষীরা থেকে নানা উপায়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা যাত্রী আনিসুর রহমান জানান, করোনা ভাইরাস বিস্তারের শুরুতেই পরিবার নিয়ে অনেক আগেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে যান তিনি। আগামী রোববার থেকে তার অফিস খুলবে।

তাই একদিন আগেই ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন তিনি। দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে তার একদিকে যেমন ৫-৬ গুণ বেশি টাকা খরচ হয়েছে তেমনি সময়ও লেগেছে অনেক। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মাথায় রাখা অসম্ভব বলে তিনি জানান।

গার্মেন্টস কর্মী নাজমা আক্তার বলেন, ‘পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করে ঢাকায় ফিরছি, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিভিন্ন যানবাহনে অনেক গাদাগাদি করে তিন-চার গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ঘাটে এসে পৌঁছেছি। করোনার ভয়ে কাজে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকলে খাব কি? ঘরে বসে থাকলে তো আর ভাত পেটে যাবে না, কাজ করেই খেতে হবে। তাই করোনা নিয়ে ভাবার সময় এখন আর নাই। অফিস দুইদিন আগে খুলেছে, এখনও অফিসে যেতে পারিনি, চাকরি আছে কি-না সন্দেহ। চাকরি না থাকলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে পথে বসতে হবে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সাতটি ফেরি চলাচল করেছে। কিন্তু দুপুরের পর থেকে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় নৌরুটের ১৩টি ফেরিই চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া দৌলতদিয়ায় ৬টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ৪টি ঘাট দিয়ে যানবাহন উঠা-নামা করছে। অপর দু’টি ঘাট পানি বৃদ্ধির ফলে বন্ধ আছে। তবে এতে যানবাহন পারাপারে কোন সমস্যা হচ্ছে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + sixteen =

Back to top button