সালমানের কারাগারে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেলেন সৌদির সেই বিখ্যাত শিক্ষাবিদ
সৌদি আরবের মানবাধিকার ও রাজনৈতিক সংস্কার আন্দোলনের রূপকার খ্যাত ড. আবদুল্লাহ আল-হামিদ শুক্রবার কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তার কার্যক্রম ও তৎপরতার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। ২০১৩ সাল থেকে তিনি কারাবন্দি ছিলেন।-খবর মিডল ইস্ট আই।
সৌদি সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইট অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি সংস্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আল-হামিদ, এটির সহপ্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো সামনে তুলে ধরতেই তিনি সক্রিয় ছিলেন। উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন আল-হামিদ। তার হার্টে সার্জারি করতে হবে বলে তিনি মাস আগে চিকিৎসক তাকে বলেছিলেন।
কিন্তু তার এই অস্ত্রোপচার কয়েক মাস পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের মে কিংবা জুনের প্রথম দিকে তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল।
গত ৯ এপ্রিল তিনি স্ট্রোক করেন। রিয়াদের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে তিনি কোমায় চলে যান। মানবাধিকার গোষ্ঠী প্রিজনার্স অব কনসাস জানায়, ইচ্ছাকৃত চিকিৎসা অবহেলাজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
তার মৃত্যুর খবরে মেনা রাইটস গ্রুপের পরিচালক ইনাস ওসমান বলেন, আবদুল্লাহ আল-হামিদের মৃত্যুতে আমরা বিপর্যস্ত। তার মৃত্যুর জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। নাজুক শারীরিক অবস্থার মধ্যেও তাকে আটকে রাখা হয়েছিল।
‘এমনকি তার হার্টে অস্ত্রোপচার বিলম্বিত করা হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ৬৯ বছর বয়সী একটা মানুষের জীবনের শেষ সময়টা কারাগারে কাটাতে হয়েছে। তার একমাত্র অপরাধ ছিল এই যে তিনি মানবাধিকারের পক্ষে কাজ করেছেন।
১৯৫০ সালে জন্ম নেয়া আল-হামিদ সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলের বরাইদায় জন্মগ্রহণ করেন।
দেশটির বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ালেখা করেছেন তিনি। ১৯৮৮ সালে তিনি ইমাম মুহাম্মদ বিন সৌদি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক হন।
এই বিস্ময়কর লেখকের ১৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। বাজারে তার সাতটি রচনা ও কবিতাসমগ্রও রয়েছে।