Lead Newsদেশবাংলা

সিলেটে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: সাইফুরের পর অর্জুন গ্রেফতার

সিলেট নগরীর এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা সীমান্ত এলাকা থেকে রোববার সকালে তাকে গ্রেফতার করেছে সিলেট জেলা পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া অর্জুন জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে।

তাকে নিয়ে ধর্ষণ মামলার ছয় আসামির মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হলো।

এর আগে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। সকাল ৮টার দিকে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা নোয়ারাই খেয়াঘাট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দুজন।

এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদি হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলা ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)।

তাদের মধ্যে তারেক ও অর্জুন শিক্ষার্থী না হলেও সবাই এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঘটনার খবর পেয়ে টিলাগড় এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রথম দিকে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ধর্ষণের ঘটনাটি ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। তারা আপস মীমাংসারও চেষ্টা চালান। পুলিশও প্রথমদিকে ঘটনাটি গণমাধ্যমের কাছে এড়িয়ে যায়।

পুলিশের দীর্ঘ সময়ক্ষেপণের কারণে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয় বলে স্থানীয়দের দাবি।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের সামনে গৃহবধূটিকে গণধর্ষণ করা হয়। কক্ষটি ২০১২ সাল থেকে ছাত্রলীগের দখল করা কক্ষ হিসেবে পরিচিত। ওই কক্ষের ছাত্রলীগের একটি পক্ষের ৬-৭ কর্মী থাকে। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্ত ধর্ষকদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। আর ওই দম্পতির ব্যবহৃত গাড়িটিও উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে রাত ১২টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে (ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) ভর্তি করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 3 =

Back to top button