Lead Newsজাতীয়

সীমান্তে ইটের বদলে পাটকেল! এবার ভারতীয়কে ধরে আনলো বাংলাদেশিরা

আসছে বিজিবি-বিএসএফ শীর্ষবৈঠক, কী থাকছে আলোচনায়?

ভারত সীমান্তে বদলে যেতে শুরু করেছে বাংলাদেশীদের শরীরী ভাষা। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ভারতীয়দের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে শুরু করেছে তারা। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সাথে সমানতালে অ্যাকশনে যাচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি ও সীমান্ত এলাকাঘেঁষা দেশপ্রেমিক গ্রামবাসী। এমনি এক বাস্তবতায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কাজ করার সময় এক বাংলাদেশি কিশোরকে বিএসএফ তুলে নিয়ে যাবার প্রতিবাদে বাংলাদেশিরা পালটা পদক্ষেপ হিসেবে এক ভারতীয় এক কৃষককে ধরে নিয়ে এসেছেন।

অভিনব এ প্রতিবাদের ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নে। এ ঘটনার পর দিনাজপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিজিবি ও বিএসএফ তাৎক্ষণিক পতাকা বৈঠকেও বসেছে। পরে একইদিন বিকেলে সেই পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দু’জনকেই ফেরত দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় যে কৃষককে ধরে আনা হয়েছিল তার নাম নারায়ণ চন্দ্র রায় (৪৫)। তিনি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুসুমন্ডি থানার পূর্ব মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আর বাংলাদেশ থেকে বিএসএফ সদস্যদের ধরে নেওয়া কিশোরের নাম মো. আলামিন। সে বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কৈকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যসহ কয়েকজন গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে নিজের কৃষি জমিতে কাজ করছিল আলামিন। এ সময় বিএসএফ সদস্যদের ৬ জনের একটা টিম এসে তাকে মারধর করে এবং টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ভারতীয় এক কৃষককে তার জমি থেকে ধরে নিয়ে আসে। তারপর বিজিবি সদস্যদের হাতে তুলে দেন।

এসব ঘটনার পর পতাকা বৈঠকে বসে বিজিবি ও বিএসএফ। বৈঠক শেষে দিনাজপুর ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আহসানুল ইসলাম বলেন, ৫ বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিএসএফ আলামিনকে তাদের সহযোগী ভেবে ধরে নিয়ে যায়। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আলামিনকে তারা ফেরত দিয়েছে। আর ভারতীয় নাগরিককেও বিএসএফের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

ওদিকে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নয়াদিল্লীতে বিজিবি ও ভারতের বিএসএফ’র শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে বিএসএফ প্রধান দলজিৎ সিং চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনার জন্য আগামী ১৬ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারত সফর করবেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মহম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকি।

সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ ও বিজিবি প্রধানদের আসন্ন বৈঠকে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তার মধ্যে রয়েছে সীমান্তে সিঙ্গেল রো ফেন্স (এসআরএফ) বাস্তবায়ন। ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়াবিহীন এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করতে চায়। তবে সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে উভয় পক্ষ কোনো প্রতিরক্ষা কাঠামো নির্মাণ করবে না মর্মে বেড়া নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছে বিজিবি।

বৈঠকে মাদক ও আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান মোকাবিলাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত আইন অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা যায় না। তবুও আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে বেশকিছু সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছে ভারত। তবে বিজিবির বাধার মুখে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =

Back to top button