ভাইরাল

স্টেশনে মায়ের মৃত্যু, জাগানোর চেষ্টা শিশুর (ভিডিওসহ)

করোনা পরিস্থিতিতে দিন যতই এগোচ্ছে ততই মর্মান্তিক দৃশ্য ভেসে উঠছে চোখের সামনে। দুর্দশার বিভিন্ন চিত্র ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেগুলোর মধ্যে একটি ভিডিও হলো, স্টেশনে নিঃসাড় হয়ে পড়ে আছে মৃত মা, আর অবুঝ শিশুটি মায়ের গায়ের ওপর দেওয়া কাপড়টি তুলে মাকে জাগানোর চেষ্টা করছে, আর পরক্ষণেই আবার সেই কাপড় দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে মাকে।

এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহারের মুজাফফরপুর স্টেশনে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকেই খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়া অভিবাসী শ্রমিকরা। তাদের বাড়ি ফেরাতে ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করা হলেও তাতে অব্যবস্থাপনার খবর প্রায় প্রতিদিনের খবরে উঠে আসছে। আর তেমনই এক পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন এই নারী।

বাড়ি ফেরার জন্য গুজরাট থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন তিনি। তবে ট্রেনের মধ্যেই গরম, ক্ষুধা ও পানির পিপাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বিহারের মুজাফফরপুরের একটি স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছানোর আগেই মারা যান তিনি।

ওই নারী ও তার সন্তানের এক ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দেড় বছরের শিশুটি বুঝতেও পারছে না কী হারালো সে! বিহারের মুজাফফরপুরের ওই স্টেশনেই পড়ে আছে সেই মৃত নারীর দেহ। তার পাশেই ঘোরাফেরা করছে অবুঝ শিশুটি। মা নেই, বোঝার মতো বয়সও হয়নি তার। সে ভাবছে তার মা হয়ত ঘুমাচ্ছে। একটু পরেই হয়তো মা উঠে কোলে তুলে নেবে তাকে। গত সোমবার অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে একটি বিশেষ ট্রেন ওই স্টেশনে পৌঁছানোর পর সেখানেই নামানো হয় ওই নারীর মরদেহ।

জানা গেছে, একই স্টেশনে দুই বছরের একটি শিশুও মারা গেছে। শিশুটির পরিবার রোববার দিল্লি থেকে বিশেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরার জন্য ওঠে কিন্তু খাবারের অভাবে ও অসহ্য গরমে মারা যায় শিশুটি।

ভারতে করোনা সংক্রমণের গতি রুখতে ২৫ মার্চ থেকে টানা চতুর্থ দফায় লকডাউন চলছে। এই লকডাউনের জেরে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বিভিন্ন রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কাজের খোঁজে বা অন্য প্রয়োজনে গিয়ে আটকে পড়া মানুষজন। যদিও অভিবাসী শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফেরাতে ১ মে থেকে ‘শ্রমিক স্পেশাল’ নামে বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে ভারতীয় রেল। তবু নানা সমস্যায় এখনো ঘর থেকে দূরে অন্য রাজ্যে চরম দুরবস্থার মধ্যে কাটাচ্ছেন বহু শ্রমিক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − seven =

Back to top button