দ্বিতীয়বার স্বর্ণপদক জয়ের লক্ষ্যে অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালে শক্তিশালী স্পেনের মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল। ইয়োকোহামার নিশান স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় ম্যাচটি। কোপা আমেরিকা হারিয়ে অলিম্পিকের সোনার মেডেল নিয়ে দুঃখ লাঘব করতে চেয়েছিল ব্রাজিল।
অন্যদিকে ২৯ বছরের খরা কাটাতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের কাছ থেকে সোনা ছিনিয়ে নিতে মরিয়া ছিল স্পেন। দুর্দান্ত লড়াইয়ে খেলা গড়াল ১২০ মিনিট পর্যন্ত।
শেষ হাসি ফুটল ব্রাজিলিয়ানদের মুখে। অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে দুর্দান্ত গোল করে জয় এনে দিলেন বদলি খেলোয়াড় ম্যালকম।
১০৮তম মিনিটে প্রায় মাঝমাঠ থেকে বলে পাস বাড়ান অ্যান্তোনি। স্পেনের ডিফেন্সিভ হাফে বল পেয়ে যান ম্যালকম। একক প্রচেষ্টায় বাম প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বাঁ-পায়ে কোনাকুনি দুর্দান্ত এক শট নেন ম্যালকম। বল উনাই সিমনকে পরাস্ত করে জড়িয়ে যায় স্পেনের জালে। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
বাকি সময়ে আর গোল শোধ করতে পারেনি স্পেন। ফলে ২-১ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে টোকিও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল। এ নিয়ে অলিম্পিকের পুরুষ ফুটবল ইভেন্টে টানা দ্বিতীয়বার স্বর্ণপদক পেল ব্রাজিল। ২০১৬ সালের অলিম্পিকেও ফাইনালে জার্মানিকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছিলে সেলেকাওরা।
ইয়োকোহামার নিশান স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটেই ঘটে অঘটন। মাইকেল ওইয়ারজাবালের একটি চেষ্টা রুখে দেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক সান্তোস। কিন্তু তার আগে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজনেই আহত। দৌড়িয়ে ফিজিও এসে দুজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
১১তম মিনিটে কুকুরেল্লার ভুলে ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। তবে দানি আলভেস তা কাজে লাগাতে পারেননি। ১৯ মিনিটে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দিচ্ছিল প্রায় ব্রাজিল। কোনোমতে নিজেই সেই বল ঠেকিয়েছিলেন ডগলাস লুইজ।
২৬তম মিনিটে বেজে উঠে ফাউলের বাঁশি। এবার হলুদ কার্ডের খাতায় নাম লেখালেন স্পেনের এরিক গার্সিয়া। ৩২ মিনেটে কুকুরেল্লার পাসে দুর্দান্ত শট নেন মার্কো আসেনসিও। ব্রাজিল গোলরক্ষক সান্তোস তা ঠেকিয়ে দেন।
একেবারে শেষ মুহূর্তে স্পেনের জালে বল জড়িয়ে দিলেন চুনহা। দানি আলভেসের একটি ক্রসকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে দিলেন চুনহা। ব্রাজিল অধিনায়ক দানি আলভেজের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যখান থেকেই ডান পায়ের দারুণ এক শটে স্পেনের জাল কাঁপিয়ে দেন চুনহা।
১-০ গোলের ব্যবধানে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।
বিরতি থেকে ফেরার পর ৫১তম মিনিটে দারুণ এক প্রচেষ্টা চালান রিচার্লিসন। তার সেই প্রচেষ্টা দুর্দান্তভাব জালের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা করেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
৬১তম মিনিটে সৌভাগ্যের দেখা মেলে স্পেনের। কার্লোস সোলারের ক্রস থেকে বল পেয়ে বক্সের একেবারে বামপ্রান্ত থেকে বাম পায়ের দুর্দান্ত শট নেন ওইয়ারজাবাল। সান্তোসকে ঠিকই পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন রিয়াল সোসিয়াদের এই ফরোয়ার্ড।
১-১ সমতায় ফেরে দুই দল। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া হয় দুই দলেরই। কিন্তু কোনো দলই লিড নিতে পারেনি।
৯০তম মিনিটে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের লুইস। রেফারি আরো চার মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করেন। কিন্তু তাতেও খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিতই রয়ে যায়। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।