Lead Newsক্রিকেটখেলাধুলা

স্বপ্নের ফাইনালে নিউজিল্যান্ড; বিদায় ইংল্যান্ডের

১২ বলে দরকার ২০ রান। পেন্ডুলামের মতো দুলছে ম্যাচ। কিন্তু ১৯তম ওভারে ওকসকে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের চিত্র বদলে দেন ড্যারেল মিচেল। ভোজবাজির মতো পাল্টে যায় সব কিছু। স্বপ্নের ফাইনালে উঠে আসলো নিউজিল্যান্ড।

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। এবার ওই হারের শোধ তুলে আরেকটি ফাইনালে পা রাখল কিইউ শিবির।

বুধবার টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের রুদ্ধশ্বাস সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৬৬ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে নানা নাটকীয়তায় এক ওভার হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌছায় নিউজিল্যান্ড। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উইলিয়ামসন শিবির।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপযয়ের মধ্যে নিউজিল্যান্ড। বল হাতে আঘাত হানেন ইংলিশ পেসার ওকস। দলীয় ৪ রানে বিদায় নেন মার্টিন গাপটিল। ৩ বলে ৪ রান করে মঈন আলীর হাতে ক্যাচ দেন তিনি। একটু পরে দলকে হতাশ করেন কেন উইলিয়ামসন। দলীয় ১৩ রানে তিনিও ওকসের শিকার। ১১ বলে ৫ রানে রশিদের হাতে ক্যাচ দেন কিউই অধিনায়ক।

শুরুর বিপর্যয় রোধে দায়িত্ব নেন ড্যারেল মিচেল ও ডেভন কনওয়ে। অনেকটা সফলও তারা। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ৯৫ রান পযন্ত। ফিফটির আগে দুর্ভাগ্যজনক স্টাম্পিংয়ের শিকার হন ডেভন কনওয়ে। ৩৮ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। তার ইনিঙসে ছিল পাচটি চার ও একটি ছক্কার মার।

ড্যারেল মিচেলের নতুন সঙ্গী তখন গ্লেন ফিলিপস। কিন্তু টিকতে পারেননি ফিলিপস। মিচেল রানের চাকা সচল রাখলেও লিভিংস্টোনের বলে বিলিংসের হাতে ধরা পরেন ফিলিপস। ৪ বলে ২ রান করেন তিনি। মিচেলের সঙ্গে তখন ক্রিজে নামেন হার্ড হিটার নিশাম। দারুণ ব্যাটিংয়ে জমিয়ে তোলেন ম্যাচ।

চার-ছক্কার উত্তেজনায় জয়ের স্বপ্ন বুনতে থাকে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দলীয় ১৪৭ রানে ভাঙে এই জুটি। দুর্দান্ত এক ক্যাচে জিমি নিশামকে ফেরান ইংলিশ অধিনায়ক মরগান। ছন্দপতন কিউই শিবিরে। ১০ বলে তিন ছক্কা ও এক চারে ২৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে ফেরেন নিশাম। ওভার তখন ১৭.৬।

কিন্তু শেষের দিকে সব জটিল সমীকরণ পাল্টে দেন এক মিচেলই। ওকসকে দুই ছক্কা হাকিয়ে দলকে পাইয়ে দেন মধুর জয়। ৪৮ বলে চারটি করে চার-ছক্কায় ৭৩ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ড্যারেল মিচেল। অনুমিতভাবে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জস বাটলার ও জনি বেয়ারস্টো। তবে ক্রিজে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি দুজন। দলীয় ৩৭ রানে ভাঙে তাদের উদ্বোধনী জুটি।

ব্যক্তিগত ১৩ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান জনি বেয়ারস্টো। পরে অবশ্য উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন জস বাটলার। তবে বড় কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি। ২৯ রান করে ইশ সোধির এলবিডব্লিউর ফাঁদে পা দিয়ে আউট হন জস বাটলার। ইংল্যান্ডের স্কোর (৫৩) তখন ফিফটি ছাড়িয়ে গেছে।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ডেভিড মালান ও মঈন আলী গড়েন ৬৩ রানের জুটি। ফিফটি থেকে বঞ্চিত হন মালান। ৩০ বলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় খেলেন ৪১ রানের দারুণ এক কার্যকরী ইনিংস। ক্রিজের এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং ঝড় তুলেন মঈন আলী।

মালান অর্ধশতক থেকে বঞ্চিত হলেও মঈন আলী ঠিকই ফিফটি তুলে নেন। ৩৭ বলে তিন বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় ৫১* রানে হার না মানা দাপুটে এক ইনিংস খেলেন মঈন। আর লিয়াম লিভিংস্টোনের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।

সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানের লড়াকু পুঁজি গড়েছে ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের হয়ে একটি করে উইকেট নেন জেমস নিশাম, ইশ সোধি, অ্যাডাম মিলনে ও টিম সাউদি।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 19 =

Back to top button