Lead Newsশিল্প ও বাণিজ্য

হঠাৎ করেই পেঁয়াজের রপ্তানি-মূল্য তিনগুণ বাড়াল ভারত

ভারতীয় কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা ‘ন্যাপেড’ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে হঠাৎ করে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৭৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে। এতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারে। আগে ভারত প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ ২৫০ মার্কিন ডলারে রপ্তানি করছিল। এখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হলে আগের এলসিগুলোর মূল্য পুনরায় বাড়াতে হবে।

এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে পেট্রাপোল বন্দরে আটকে আছে দেড় শতাধিক পেঁয়াজের ট্রাক ও ৪২টি ওয়াগানযুক্ত তিনটি পেঁয়াজের ট্রেন।

সোমবার সকালে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ প্রবেশের পরই দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের সংগঠন। ভারতের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ সঙ্কট থাকায় বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করতেই পেঁয়াজ আমদানিতে মূল্য তিনগুণ করা হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের।

বাংলদেশি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পেঁয়াজ নিয়ে প্রতিবারই ভারত এ কাজ করে। শুধু পেঁয়াজ নয়, প্রতিটি খাদ্যদ্রব্যে এ কাজটি করে ভারত সরকার।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ার পরই দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ে। সোমবার যে ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল সে পেঁয়াজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজার মনিটরিং না থাকায় দেশে যথেষ্ট পেঁয়াজ মজুত থাকলেও আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন।

বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মা সরস্বতী এজেন্সির স্বত্বাধিকারী বাপ্পা মজুমদার জানান, বন্যার কারণে ভারতে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে পেঁয়াজ রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভারতের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাজারে পেঁয়াজের মূল্য সহনশীল রাখতেই ভারত সরকারের কৃষিপণ্য মূল্য নির্ধারণকারী সংস্থা ‘ন্যাপেড’ রফতানি মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে।

বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রয়েল এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম রয়েল বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করতেই কৌশল হিসেবে রফতানি মূল্য তিনগুণ করেছে। এমন চলতে থাকলে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকবে। সে দেশের সরকার যদি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তবে বাজার মূল্য আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে। বাংলাদেশের চাহিদার বেশির ভাগ পূরণ হয় ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজে। আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়বে দেশের বাজারে। দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন এলসিতে পেঁয়াজ আমদানি করে ব্যবসায়ীরা লাভ করতে পারবে না বলে জানান তিনি।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভারতে মূল্যবৃদ্ধির কারণে আজ দুদিন ভারত থেকে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। বাংলাদেশি অনেক আমদানিকারকের এলসি ভারতের রপ্তানিকারকদের কাছে পড়ে আছে। আমদানিকারকরা বাড়তি মূল্যে পেঁয়াজ আমদানি করবে কি-না সেটা বলা যাচ্ছে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 1 =

Back to top button