ধর্ম ও জীবন

হিজড়াদের বিয়ে; ইসলামী হুকুম কী?

আরবিতে হিজড়াকে খুনসা বলা হয়। খুনসা সাধারণত দুই ধরনের হয়ঃ-

১. খুনসা মুশকিলাহ ২. খুনসা গাইরে মুশকিলাহ

খুনসা মুশকিলাহ কাকে বলে? কোন ব্যক্তি পুরুষ না মহিলা যদি বুঝার কোন উপায় থাকেনা বা কোনভাবেই যাদের লিঙ্গ (জেন্ডার) নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না তাদেরকে খুনসা মুশকিলাহ বলে।

এমন খুনসা বা হিজড়াকে বিয়ে করা বৈধ নয়। (ফতওয়ায়ে শামি: ৬/৭২৯)

খুনসা গাইরে মুশকিলাহ কাকে বলে? বিভিন্ন আলামতের মাধ্যমে যাদের লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়। অর্থাৎ স্ত্রীবাচক বা পুরুষবাচক কোনো আলামতের মাধ্যমে ধারণা করা যায় তাদের লিঙ্গ (জেন্ডার) এই ধরণের।
এদেরকে বিবাহ করা জায়েজ।

বিবাহের পদ্ধতি হলো আলামতের মাধ্যমে যদি স্ত্রীগোত্রীয় প্রমাণিত হয় তাহলে পুরুষের সঙ্গে এবং পুরুষগোত্রীয় প্রমাণিত হলে স্ত্রীলোকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে। (ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ২০/২০১)

কীভাবে লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হবে?

সাবালক বা সাবালিকা হওয়ার আগে পস্রাব করার ধরণ দেখে নেওয়া। অর্থাৎ যদি পুরুষদের মত পেশাব করে পুরুষগোত্রীয়, যদি মেয়েদের মত পস্রাব করে তাহলে নারীগোত্রীয় গণ্য হবে।

যদি দাড়ি গজায় তাহলে পুরুষগোত্রীয় আর যদি বুক স্ফীত হয় নারীগোত্রীয় ধরা হবে।

স্বপ্নদোষ থেকেও আন্দাজ করা যায়। যদি পুরুষালী স্বপ্ন দেখে পুরুষ, যদি মেয়েদের মত স্বপ্ন দেখে তহরে নারী।

অনেক সময় হিজড়া পুরুষ স্ত্রীসম্ভোগের আগ্রহ বা স্ত্রী লোকের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। কেবল এই কারণে এক হিজড়া থেকে রাসুলুল্লাহ সা. তার স্ত্রীদের পর্দা করতে বলেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং – ৪৩২৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং – ২১৮০)

অনেক সময় হিজড়া নারীর হায়েজ হয় বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে তাকে স্ত্রীলোক বলে গণ্য করা হবে।

মন্তব্যঃ দ্বিতীয় প্রকারের হিজড়াকে বিবাহ করা জায়েজ বলে যদিও ফুকাহায়ে কেরাম মত দিয়েছেন; কিন্তু একইসঙ্গে তারা সতর্ক করেছেন, স্বামী-স্ত্রী কেউ যেন অবৈধ পন্থায় তাদের যৌন চাহিদা পূরণ না করে।

সুতরাং বিয়ে করার আগে অবশ্যই আবেগ নয় বরং বিবেক দিয়ে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + eleven =

Back to top button