৩০ জনকে দাফন করেও কাউন্সিলর খোরশেদের করোনা নেগেটিভ
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মরদেহ থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে এই আতঙ্কে যখন স্বজনরাও কাছে আসছেন না, এরমধ্যে নারায়ণঞ্জের একজন কাউন্সিলর খোরশেদ মাঠে নেমেছিলেন মৃতের দাফন কাজ সম্পন্ন করতে। বলেছেন, করোনার হটস্পটখ্যাত নারায়ণঞ্জে যদি কেউ করোনায় মারা যাবে তার দাফন কাফন নিজেই করবেন।
ইতি মধ্যে ৩০ জনের মতো করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া মুসলমান ও হিন্দুর দাফন এবং সৎকার করেছেন কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তার নেতৃত্বে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল যেখানেই নারায়ণঞ্জের কেউ করোনা বা উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন তাদের দাফন বা সৎকার করছেন।
অনেকের মতো তারও ভেতরে আতঙ্ক ছিল দাফন করতে গিয়ে নিজেও আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন কি না মরণঘাতী করোনায়। তাই পরীক্ষা করেছিলেন এই জনপ্রতিনিধি। তবে তার ফলাফল পেয়েছেন যাতে নেগেটিভ এসেছে। এ কথা কাউন্সিলর খোরশেদ নিশ্চিত করেছেন।
দলমত নির্বিশেষে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে খোরশেদের উদ্যোগ। কারণ নারায়ণগঞ্জে করোনার সংক্রমণ শুরুর পরেই এর বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ শুরু করেন তিনি। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত কেউ মারা গেলে কয়েক ঘণ্টা পর আর তা থেকে সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ থাকে না। কারণ ভাইরাসগুলো মরে যায়।
কাউন্সিলর খোরশেদ জানিয়েছেন, ইতি মধ্যে দুই দফা করোনার পরীক্ষা করেছেন। সবশেষ গত বুধবার টেস্ট করতে দিয়েছিলেন যার রেজাল্ট শুক্রবার পেয়েছেন। দুটি রিপোর্টেই তার নেগেটিভ এসেছে।
খোরশেদ বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি করোনা নিয়ে সক্রিয় ছিলাম ও এখনো আছি। প্রচুর রোগীর বাসায় গিয়েছি। তার মধ্যে অনেকে ছিল যাদের মধ্যে উপসর্গ ছিল, আবার কারো মৃত্যুর পর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
অনেকের পরিবারের লোকজনও ভয়ে মৃতদেহ ধরেনি। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি যথেষ্ট প্রটোকল পোশাক পরিহিত হয়েই কাজগুলো করতে। কিন্তু তার পরেও ঝুঁকি ছিল।
সে কারণেই নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের নিজ উদ্যোগেই আমার নমুনা সংগ্রহ করেছিল। দুটি রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে। এজন্য আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমি মনে করছি এ রিপোর্ট আমার কাজের গতি আরো বাড়াবে।’
কাউন্সিলর বলেন, ‘আমি প্রতিদিন নিয়মিত চার থেকে পাঁচবার গরম পানিতে গারগিল করতাম। নিয়ম করে প্রতিদিন একাধিকবার গরম পানির ভাপ নিয়েছি। সকালে একবার এক গ্লাস গরম পানির সাথে আধা চা চামচ ভিনেগার মিশিয়ে গারগিল করেছি। বিকালে আরেকবার করেছি। একই ভাবে সকালে একবার এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে গারগিল করেছি, রাতেও করেছি। দিনে রাতে একাধিকবার গরম পানির ভাপ নিয়েছি। ভিনেগার একটি এ্যাসিড, এতে জীবাণুর মৃত্যু ঘটে। একই ভাবে গরম পানিতে লবণও কার্যকরী।’