অপরাধ ও দূর্ঘটনা

৫ কাঠা জমির বিনিময়ে দফারফা হলো ধর্ষণের ঘটনা

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের সরমহল গ্রামে দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) দিনভর দৌড়ঝাঁপ করেছে স্থানীয় একটি মহল।

থানা এবং ইউনিয়ন পরিষদে ছোটাছুটির পর শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকেলে ধর্ষকের বাড়িতে স্থানীয় কিছু লোকজন সালিস বৈঠক বসান। সালিসদারদের পরামর্শে ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে ৫ কাঠা জমি লিখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ধর্ষণে অভিযুক্ত আল আমিনের বাবা আ. রশিদ খান।

এতেই ঘটনার দফারফা হয়ে যায়। সালিস বৈঠকে কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার লাভলী বেগম, লাভলী বেগমের স্বামী ইউনিয়ন যুবদল নেতা টিপু সুলতান, সমাজসেবক সাইদুর রহমান সোহেল ফরাজী ও মো. দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন দেশের একটি অনলাইন মিডিয়াকে বলেন, টিপু তার ভাই দেলোয়ারকে নিয়ে শুক্রবার সকালে আমার কাছে এসে ঘটনা মীমাংসা করে দিতে বলেন। আমি পরিষ্কার বলে দিয়েছি; স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার মীমাংসা সালিসে হবে না। তোমরা থানার ওসি অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যাও।

স্থানীয় সূত্র থেকে জানায়, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রাত ১১টার দিকে ঘরের বাইরে বের হয় সরমহল পুনিহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী। দীর্ঘসময় ঘরে না ফেরায় ছাত্রীর বড় বোন তাকে বাথরুমে না পেয়ে বাড়ির লোকজন নিয়ে খুঁজতে বের হন। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে রাতেই পাশের বাড়ির আ. রশিদ খানের বাড়িতে গেলে তারাও তার ছেলে আল-আলিমনকে ঘরে না পেয়ে মোবাইলে ফোন দেন। ফজরের সময় আল আমিন বাড়িতে এসে জানায় নানা বাড়িতে ছিল।

২৩ এপ্রিল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফরাজী বাড়ির সামনে জোড়া ব্রিজের রাস্তার পাশে পড়ে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে যুবদল নেতা টিপু সুলতানসহ এলাকাবাসী ছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সুস্থ হওয়ার পর স্কুলছাত্রী জানায়, রাত ১১টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে দরজা খুলে বাইরে নামার পর চোখ মুখ বেঁধে তাকে খালের পাশে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক। মুখ খোলার পর আল আমিনের কণ্ঠ শুনতে পাই। সেখানে আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করে আল আমিন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আহম্মেদ বলেন, স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ পাইনি। আর গ্রাম্য সালিস যে হয়েছে, তা আমাকে জানায়নি কেউ।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুম্পা সিকদার বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। ধর্ষণের ঘটনা সালিসে মীমাংসার সুযোগ নেই। আমাকে ইউপি চেয়ারম্যান জানালে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নিতাম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − ten =

Back to top button