Lead Newsআন্তর্জাতিক

‘৮৫ লাখ টাকার জন্য ফাহিম সালেহকে হত্যা’

জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহকে (৩৩) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ।

শুক্রবার সকালে ফাহিম সালেহের ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিলকে (২১) পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গণমাধ্যমটি দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে। তবে গ্রেফতারের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।

গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, ফাহিম সালেহের এক লাখ মার্কিন ডলার তার ব্যক্তিগত সহকারি টাইরেস ডেভন হাসপিল চুরি করেছেন এটা তিনি (ফাহিম সালেহ) জেনে যাবার পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, টাইরেস ডেভন হাসপিল বর্তমানে জেলে আছেন এবং তার বিরুদ্ধে সালেহকে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া গোয়েন্দাদের ধারণা, গত সোমবারই হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ফাহিম সালেহ।

এদিকে ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ফাহিম সালেহকে ইলেকট্রিক স্টানগান (টেজার) দিয়ে দুর্বল করে ঘাড় ও গলায় কাছে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এরপর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে কেটে তার লাশ টুকরো করা হয়। পরে হত্যার প্রমাণ মুছে ফেলতে প্ল্যাস্টিক ব্যাগে ভরে লাশ অন্য কোথাও ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু ফাহিমের এক আত্মীয় তার খোঁজে বাসায় আসায় সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। বাসার কলিংবেলের শব্দ পেয়ে হত্যাকারী ভবনের পিছনের সিঁড়ি দিয়ে পালিয়ে যায় বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

এর আগে লাশ উদ্ধারের পর নিউইয়র্ক সিটির সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানান, ফাহিম সালেহর গলা ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতে তার মৃত্যু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ডকে ‘পেশাদার খুনির মতো কাজ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

এদিকে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে এই বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানোর কথা রয়েছে। ২১ বছর বয়সী এই তরুণের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধের অভিযোগও আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। ফাহিম আমেরিকার বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’র অন্যতম উদ্যোক্তা। ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় ফিরে এসে পাঠাও চালু করেন এবং নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। এরপর ফাহিম নাইজেরিয়া ও কলম্বিয়ায় এমন আরো দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানি চালু করেন। সেই দুটি কোম্পানিরও মালিক তিনি।

উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নিউইয়র্ক সিটির লোয়ার ইস্ট ম্যানহাটনের বিলাসবহুল কনডোমিনিয়াম (অ্যাপার্টমেন্ট) থেকে ফাহিমের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে নিউইয়র্ক পুলিশ। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ধর্নাঢ্য এই তরুণ ২০১৫ সালে বাংলাদেশে চালু করেন জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’। গত বছর সোয়া মিলিয়ন ডলার দিয়ে বিলাসবহুল কনডোমিনিয়ামটি কিনেছিলেন তিনি। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × three =

Back to top button