দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ দলের জার্সিতে খেলছেন মাহমুদউল্লাহ। এই ক্যারিয়ারে তাঁর নামের পাশে নেই অনেক সেঞ্চুরি বা হাজার হাজার রান। কিন্তু দলের জন্য একজন মাহমুদউল্লাহ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা কারো অজানা নয়। সে কথাটাই আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। সাবেক এই অধিনায়ক জানালেন, দেশের জন্য একেবারে নিঃস্বার্থভাবে খেলেন মাহমুদউল্লাহ। তাই অধিনায়ক থাকাকালীন তাঁর ওপর অনেক ভরসা করতেন মাশরাফী।
সোমবার রাতে বর্তমান অধিনায়ক তামিম ইকবালের ফেসবুক লাইভে আসেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী। লাইভে তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, সাকিবদের প্রশংসায় ভাসালেন অধিনায়ক। তবে সবার মধ্যে মাহমুদউল্লাহই বেশি দাগ কেটেছে মাশরাফীর মনে। গতকাল লাইভে সে প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তামিম।
মাশরাফীকে তামিম প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কোনো না কোনোভাবে আমাদের বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন। দলের সবাইকে আগলে রেখেছেন। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ ভাইয়ার ক্ষেত্রে আপনার স্নেহটা অন্যরকম ছিল। আপনি উনাকে খুব ভরসা করেন, কেন?’
জবাবে মাশরাফী বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহ এমন একজন ব্যাটসম্যান, সে যদি চার-পাঁচ নম্বরে ব্যাট করত, তাহলে ওর নামের পাশে হাজার হাজার রান থাকত। সে নিজেকে অনেক ওপরে নিতে পারত। বিষয়টি নিয়ে মাঝেমধ্যে ওর মন খারাপ হয়। কিন্তু কিছু বলে না। ও চাইলে কিন্তু দাবি করতে পারত যে আমি সিনিয়র ক্রিকেটার, আমি ওপরের দিকে ব্যাট করব। কিন্তু কখনো বলেনি। দেশের জন্য হাসিমুখে মেনে নেয় সব। সে মন থেকে দেশের জন্য খেলে। এটা সবাই কিন্তু পারে না। ওর জন্য আমারও মায়া লাগে। মাহমুদউল্লাহ যখন ব্যাটিং করতে নামে, তখন দেখা যায় ২০-৩০ বল বাকি থাকে। তখন আর একটা ক্রিকেটারের মেরে খেলতে হয়। কখনো সফল হয়, কখনো না। কিন্তু ব্যর্থ হলে ওকেই বেশি সমালোচনা শুনতে হয়। সে সব মেনে নেয় হাসিমুখে। সে একমাত্র খেলোয়াড়, যে দলের জন্য শুধুই নিঃস্বার্থভাবে খেলে। না হলে ওর নামের পাশে আজ অনেক রান থাকত।’
এর আগে গত রোববার মাহমুদউল্লাহকে লাইভে তামিম বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশে কেবল ৭০-৮০ রান বা সেঞ্চুরিকেই মূল্যবান মনে করি। কিন্তু আপনি এদিক থেকে মাঝেমধ্যে দুর্ভাগা, আমার মনে হয়। আপনার ৩০-৩৫ রানের যে ইনিংসগুলো আছে, হয়তো অতটা কৃতিত্ব পায় না, কিন্তু আমরা যারা টিমমেট, আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে আপনার এই ৩০-৩৫ রানের ইনিংসগুলো কতটা মূল্যবান। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেই ইনিংসগুলো ৭০-৮০ রানের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার এই ৩০-৪০ রান ও নিঃস্বার্থভাবে খেলা, উইকেটে গিয়েই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, আপনাকে নিয়ে আমরা সবাই গর্ব করি।’