লাইফস্টাইল

গোঁফ ছোট রাখুন, রোগ মুক্ত থাকুন

বয়ঃসন্ধিকালে সব ছেলেদেরই গোঁফ ওঠে। নিওলিথিক যুগ থেকেই পাথরের ক্ষুর দিয়ে ক্ষৌরী করার প্রচলন শুরু হয়, আর এই সুদীর্ঘকালের ব্যবধানে গোঁফের নানা রকম ফ্যাশন চালু হয়েছে। অনেকে আবার গোঁফকে ব্যক্তির চিহ্ন মনে করে।

বিভিন্ন জাতি-গোত্রর মতো গোঁফেরও রয়েছে নানা নাম। দালি গোঁফ, ইংরেজ, ফু মঞ্চু গোঁফ, পাকোনো গোঁফ, অশ্বখুর গোঁফ, সাম্রাজ্যিক গোঁফ, মেক্সিকান গোঁফ, প্রাকৃতিক গোঁফ, পেনসিল গোঁফ, টুথব্রাশ গোঁফ ইত্যাদি।

কোনো কোনো দেশে আবার বিশেষ চাকরিতে গোঁফ রাখার প্রতি উৎসাহিত করা হয়। যেমন ভারতের উত্তর প্রদেশের পুলিশদের গোঁফ রাখায় উৎসাহিত করার জন্য গোঁফধারী পুলিশ সদস্যদের জন্য ২০০ রুপি বাড়তি বেতন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

কিন্তু ইসলাম ধর্মে গোঁফ রাখার প্রতি নিরুৎসাহ করা হয়েছে। হজরত ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) আমাদের গোঁফ খাটো করতে এবং দাড়ি লম্বা করতে আদেশ দিয়েছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৬৪)

উপরোক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, গোঁফ বড় করা মুসলিমদের আচার নয়। যেহেতু রাসুল (সা.) এমনটি করতে নিষেধ করেছেন। কোনো কোনো বর্ণনামতে রাসুল (সা.) গোঁফ রাখতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি গোঁফ না ছাঁটে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। (নাসায়ি, হাদিস : ১৩)

তাই কোনো মুসলমানের জন্য ফ্যাশন করার উদ্দেশ্যেও গোঁফ রাখা উচিত নয়। বলা যায় গুঁড়ি গুঁড়ি করে গোঁফ কেটে ফেলাই মুসলিমের চিহ্ন। এটা রাসুল (সা.) এর সুন্নত। শুধু তা-ই নয়, গোঁফ কাটার সর্বোচ্চ সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন রাসুল (সা.)।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের জন্য গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা, নাভীর নিম্নভাগের লোম চেঁছে ফেলার ও বগলের পশম উপড়ে ফেলার মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যে, আমরা যেন এ কাজগুলো চল্লিশ দিনের বেশি সময় পর্যন্ত ফেলে না রাখি। বর্ণনাকারী বলেন, আরেকবার চল্লিশ রাতের কথাও বলেছেন। (নাসায়ি, হাদিস : ১৪)

কারণ এর বেশি সময় ধরে গোঁফ বড় করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। গোঁফের মাধ্যমে মানুষের শরীরে রোগ-জীবাণু ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের বেশি আশঙ্কা থাকে। এতে লেগে থাকা ধুলো-বালি, ঘাম ইত্যাদি খাবারের সঙ্গে মিশে পাকস্থলীতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণুর সৃষ্টি করতে পারে। তাই কোনোভাবেই গোঁফ লম্বা করা উচিত নয়।

অনেকে মনে করেন, গোঁফ স্পর্শ করা পানি পান করা হারাম। এ কথাটির কোনো

ভিত্তি নেই। তবে হ্যাঁ, কোনো বিধর্মীকে অনুসরণ করার উদ্দেশ্যে গোঁফ বড় করা নাজায়েজ। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি বিজাতিদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 1 =

Back to top button