বিএনপি রাজনৈতিক আইসোলেশনে ছিল এবং আছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি রাজনৈতিক আইসোলেশনে ছিল এবং আছে।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো দুর্যোগে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করাই বিএনপির রাজনীতি। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশের জনগণ তাদেরকে কর্মহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ধারে কাছেও দেখেনি। তারা রাজনৈতিক আইসোলেশনে ছিল এবং আছে।’
বুধবার (২৭ মে) জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিওবার্তায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। সরকারের কার্যক্রমের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের জবাবের প্রেক্ষিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘অসহায় জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে, গণমাধ্যমে কথামালার ফুলঝুরি বর্ষণ তাদের জননিন্দিত হাতিয়ার। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে কর্মহীন মানুষের জন্য এবং ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ধারে কাছেও দেশের জনগণ তাদের দেখেনি। তারা রাজনৈতিক আইসোলেশনে ছিল এবং আছে। লকডাউনের নামে দেশ ও জনগণের জীবনকে স্তব্ধ করার পাশাপাশি জীবিকা রুদ্ধ করে অর্থনৈতিক স্থবিরতার সৃষ্টির অপকৌশল তাদের মনের কথা। শেখ হাসিনা সরকার দক্ষতা ও সহযোগিতার সঙ্গে অভিজ্ঞদের সাথে আলোচনা করেই জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য তৈরি করার চেষ্টা করছে।’
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা সব সময় ঝাঁঝালো কিছু শব্দ চাতুর্যের মাধ্যমে পড়ে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা করে। মির্জা ফখরুল সাহেব সমন্বয়হীনতার কথা বলে কি বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট না করে বরাবরের মতো কথামালার চাতুরী দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন।’
দুর্যোগ মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের সক্ষমতা ও মানবিক প্রয়াস দেশবাসীর জানা রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অতীতে দেশের বিভিন্ন দুর্যোগে শেখ হাসিনা ও তার দল জনমানুষের পাশে সবার আগে দাঁড়িয়েছে। সরকারে থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা সরকার দুর্যোগ মোকাবিলায় যে সক্ষমতা দেখিয়েছে তা অতীতে ও বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। করোনা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকার দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে করোনার বিস্তার রোধ ও আক্রান্তদের চিকিৎসা ও অন্যান্য কার্যক্রমে।’
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার অর্থনৈতিক লোকসানের কথা জেনেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। অর্থনীতির স্থিতি ক্ষতি পুষিয়ে জনগণের কল্যাণে কয়েক স্তরে ঘোষণা করেছে প্রণোদনা প্যাকেজ। সাধারণ ছুটি তথা লকডাউন যে নামেই বলা হোক এর উদ্দেশ্য হলো শারীরিক তথা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা। সরকার জনগণের সচেতনতার দুর্গ গড়ে তোলাকে দুর্যোগ মোকাবিলার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করলেও মির্জা ফখরুল সাহেব সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম মিথ্যাচার করছেন। বিএনপির রাজনৈতিক ভাবনা এই আজ লকডাউনে আটকে রয়েছে। তারা সরকারের কোনো ইতিবাচক প্রয়াস খুঁজে পান না।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো করোনা তহবিল গঠন, হেল্পলাইন চালুসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এসবের কোনোটাই বিএনপি করতে পারেনি। দেশের জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ব নেই?’
গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত করোনা পরীক্ষা পদ্ধতির অনুমোদন প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার চলমান করোনা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঘোষিত নীতি অনুসরণ করছে। করোনা পরীক্ষায় র্যাপিড টেস্ট কিটের ব্যবহার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অনুমোদিত নয়। তবুও সরকার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত কিট পরীক্ষণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। কিট অনুমোদনের জন্য রয়েছে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি। সে পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য ওষুধ প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। যা উদ্ভাবক ডাক্তার বিজন মিডিয়ায় বলেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের উদ্যোগ-সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন।’
সরকার স্বাস্থ্য খাতসহ যেকোনো খাতে জনহিতকর গবেষণা উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে স্বাগত জানায়।
দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘অন্ধকার সুড়ঙ্গ দেখে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। সুড়ঙ্গ শেষেই রয়েছে আশার আলো। আমি সকলকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি। আহ্বান জানাচ্ছি কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার। আপনারা মনে সাহস রাখুন, দুর্যোগের অমানিশায় আমাদের সঙ্গে আছেন একজন শেখ হাসিনা, যিনি আলো হাতে আঁধারের কাণ্ডারী।’