১৬০০ টন পেঁয়াজ দিয়ে ভারতের সঙ্গে রেলপথে আমদানি-রফতানি শুরু
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতে অব্যাহত লকডাউনের কারণে সড়কপথে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যেই এই প্রথম দিনাজপুরে রেলপথে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে।
জানা যায়, লকডাউনের ফলে সড়কপথে আমদানি বন্ধ থাকার পরও ভারত থেকে পেঁয়াজ আসায় বাংলাদেশে সংকট কাটিয়ে বাজারে পেঁয়াজের মূল্য সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিরল কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা এবি রায়হান আলী জানান, করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশ ও ভারতে লকডাউন থাকায় বন্ধ হয়ে যায় দুই দেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। ফলে অনিশ্চয়তায় পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। এই ক্ষতির পরিমাণ কমাতে উভয় দেশেই গত ৪ মে সড়কপথের পরিবর্তে শুধু রেলপথের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার বিকালে দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রবেশ করেছে পেঁয়াজবাহী একটি ট্রেন।
তিনি আরও জানান, ভারতের ৪২টি ওয়াগনে পেঁয়াজ নিয়ে একটি ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এই ৪২টি ওয়াগনে করে মোট এক হাজার ৬০০ টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করা হয়।
তিনি আশা প্রকাশ করে জানান, লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও রেলপথে এই পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হওয়ার পাশাপাশি বাজারেও পেঁয়াজের সংকট দূর হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে রেলপথে আমদানি-রফতানি চালুর সিদ্ধান্তের পর বিরল স্থলবন্দর ব্যবহার করে এই পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেয় বগুড়ার আমদানিকারক রায়হান ট্রেডার্স। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ঢাকা লজিস্টিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা এ পেঁয়াজ আমদানি করে।
ঢাকা লজিস্টিক নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি মো. রাজিবুল আলম জানান, প্রতি টন পেঁয়াজ ১৬৫ ডলার এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) মূল্যে ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।
তিনি জানান, এটিই সর্বনিম্ন মূল্য। এই দামে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকো ড্রাইভার রবিউল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুর দেড়টায় তারা একটি ইঞ্জিন নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাধিকাপুর রেলস্টশনে যান। সেখানে ভারতের ৪২টি ওয়াগনে এক হাজার ৬০০ টন পেঁয়াজ নিয়ে বিকাল সাড়ে ৫টায় তারা বিরল স্থলবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান।
পার্বতীপুরে রেলওয়ে জংশন পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে এই পেঁয়াজ আমদানিকারকের কাছে তুলে দেবেন তারা।
বিরল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মাসুদ পারভেজ জানান, বিরল স্থলবন্দর দিয়ে এই প্রথম আমদানি হলো পেঁয়াজ।
এ ছাড়া এই পথে পেঁয়াজসহ আরও পণ্য ভারত থেকে আমদানি করা হবে বলে আমদানিকারকরা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম সচল হওয়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়সহ বাংলাদেশ রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে। রেলপথে এই বন্দর দিয়ে প্রথম পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় দিনটিকে স্মরণীয় হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। সূত্র যুগান্তর