সাড়ে ৭শ কোটি ডলার হারালেন মার্ক জুকারবার্গ
ফেসবুক বর্ণবাদী প্রচারণা সংক্রান্ত পোস্টে লাগামহীন স্বাধীনতা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনকারীদের এই অভিযোগে এবার সমর্থন দিয়েছে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
বড় অংকের বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানের একযোগে এ বয়কটের কারণে ৭২০ কোটি ডলার সম্পদমূল্য হারিয়েছেন ফেসবুক ইঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ।
দরপতনের এই ঘটনার সূত্রপাত হয় গত শুক্রবার। এদিন ফেসবুকের বৃহত্তম বিজ্ঞাপনদাতা এবং ভোক্তাপণ্য উৎপাদক ইউনিলিভার বয়কটকারী অন্যান্য ব্রান্ডের সঙ্গে যোগ দেয়। ফলে মার্কিন পুঁজিবাজারে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ দরপতনের শিকার হয় ফেসবুকের শেয়ার। গত তিন মাসের ভেতর এটা ছিল সর্বোচ্চ দরপতনের ঘটনা। ফেসবুকের সম্পদেও নিজেদের বিনিয়োগ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইউনিলিভার। খবর ব্লুমবার্গের।
শেয়ারের মূল্য পতনের কারণেই ফেসবুক মোট ৫ হাজার ৬শ কোটি ডলারের বাজারমূল্য হারায়। এর ফলে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স ক্রমে ফেসবুক মুখ্য নির্বাহীর মোট সম্পদ নেমে আসে ৮ হাজার ২৩০ কোটি ডলারে। ৭২০ কোটি ডলার কম সম্পদ্মুল্যের কারণে তিনি এখন একধাপ পিছিয়ে বিশ্বের চতুর্থ সেরা ধনীর অবস্থানে চলে গেছেন। তার জায়গায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন বিলাস পণ্য বিক্রেতা লুই ভিটো’র প্রধান বার্নার্ড আর্নল্ট। ব্লুমবার্গ সেরা ধনীর তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে জেফ বেজোস এবং বিল গেটসের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফেসবুক বর্জনের সিদ্ধান্তে সাড়া দিয়েছে নানা খাতের প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে যেমন যোগাযোগ খাতের কোম্পানি ভেরিজোন কম্যিউনিকেশন্স ইঙ্ক রয়েছে, তেমনি রয়েছে হার্শে কো. নামের বিখ্যাত চকলেট বার উৎপাদক। বর্ণবাদী ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ এবং মিথ্যে সংবাদ প্রচারের লাগাম টেনে ধরতে ফেসবুক ব্যর্থ হয়েছে বলে আগে থেকেই সমালোচনা আছে। সেই সমালোচনায় নতুন জোয়ার আসে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার কর্মীদের অভিযোগের পর থেকে।
পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ কোমল পানীয় উৎপাদক কোকাকোলা কো. জানিয়েছে, আগামী ৩০ দিনের জন্য তারা সামাজিক গণমাধ্যমটিতে বিজ্ঞাপন বাবদ অর্থ খরচ করা বন্ধ রাখবে।
বাজার পরিস্থিতির এই দূরাবস্থায় শুক্রবার মার্ক জুকারবার্গ জানান, এখন থেকে তার প্রতিষ্ঠান ‘ঘৃণামূলক’ বক্তব্যের সংজ্ঞার আওতা আরও বাড়াবে। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষী প্রচারণা চালানোর প্রয়াস নিলে, ওই ব্যবহারকারীর সকল রাজনৈতিক পোস্ট নিষিদ্ধ করা হবে।
‘কোনও রাজনৈতিক নেতাই এ নীতির আওতামুক্ত থাকবেন না’ ঘোষণা করেন জুকারবার্গ।