Lead Newsভ্রমন

এখন বাংলাদেশিরা কোন কোন দেশে যেতে পারবে?

মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের সাধারণ যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। তবে খুব জরুরি প্রয়োজনে অনেকে বিশেষ ফ্লাইটে নানা দেশে যাতায়াত করছেন। কবে স্বাভাবিক হবে এ পরিস্থিতি? এটি নির্ভর করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর।

ভারত

চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে কিছু দেশের সাথে ভারতের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যোগাযোগ শুরু হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে দেশটির বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারি কোন ঘোষণা আসেনি।

নানা কাজে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ ভারত যায়। এর মধ্যে রয়েছে ব্যবসা, চিকিৎসা এবং প্রমোদ ভ্রমণ। কিন্তু ভারতের সাথে বাংলাদেশের সবগুলো স্থলবন্দর এখন মানুষ আসা-যাওয়ার জন্য বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ভারতে সব ধরণের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, বাংলাদেশিদের জন্য যাতায়াত একেবারে উন্মুক্ত করা না হলেও কিছু কিছু বিষয় অগ্রাধিকার পেতে পারে। 

ইউরোপ

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো বিদেশিদের আগমনের জন্য তাদের বিমান চলাচল শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বাংলাদেশে এই তালিকায় নেই। 

শুধু বাংলাদেশই নয়, আমেরিকা, ব্রাজিল এবং রাশিয়াও এই তালিকায় নেই। কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-

১. যেসব দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কম। অর্থাৎ যেসব দেশে এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৬ জনের কম সংক্রমিত হয়েছে সেসব দেশের নাগরিকদের ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন,

২. যেসব দেশে সংক্রমণের হার নিচের দিকে,

৩. যেসব দেশে সামাজিক দূরত্বের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সিঙ্গাপুর

সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী স্বল্প সময়ের জন্য যারা সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য একটি উপায় আছে। যারা জরুরি ব্যবসা কিংবা অফিসিয়াল কাজে সিঙ্গাপুর যেতে চান তাদের জন্য রয়েছে এই বিশেষ ব্যবস্থা।

এই ব্যবস্থাটিকে বলা হয় গ্রিন/ফাস্ট লেন অ্যারেঞ্জমেন্ট। এর আওতায় একটি সেফ ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে। এটি ছাড়া সিঙ্গাপুরে ঢোকা যাবেনা।

এছাড়া সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদন নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য সেখানে যাওয়া যাবে।

যেসব বিদেশী নাগরিক স্বল্প সময়ের জন্য সিঙ্গাপুর সফর করবেন তাদের জন্য কিছু নির্দেশনা দেয়া আছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে।

সিঙ্গাপুর সরকার দেশের অর্থনীতি এবং জীবনযাত্রা ধীরে-ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার কাজ শুরু করেছে। তবে যারা স্বল্প সময়ের জন্য সিঙ্গাপুর ভ্রমণে যেতে চান তাদের ক্ষেত্রে এখনো বাধা রয়েছে।

১৭ই জুন থেকে যারা সিঙ্গাপুরে যাবেন স্বল্প সময়ের জন্য তাদের জন্য সিঙ্গাপুরে কোভিড-১৯ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সফরকারীকে টেস্টের খরচ বহন করতে হবে।

থাইল্যান্ড

যারা ব্যবসার কাজে থাইল্যান্ডে যাবেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যারা চিকিৎসার জন্য যাবেন তাদের ক্ষেত্রেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে থাইল্যান্ড। এর পাশাপাশি রয়েছে দক্ষ কর্মী এবং বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী।

জানানো হয়েছে, যারা থাইল্যান্ড যাবেন তাদের ক্ষেত্রে ‘কোভিড-১৯ মুক্ত’ সনদ থাকতে হবে এবং পাশাপাশি তাদের থাইল্যান্ডে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

এই শর্ত মেনে থাইল্যান্ড ভ্রমণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এরই মধ্যে ৫০ হাজার মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছে।

বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ প্রতিবছর পর্যটনের জন্য থাইল্যান্ড যায়। তবে দেশটি আপাতত পর্যটন ভিসা দিচ্ছে না।

মালয়েশিয়া

শুধু পর্যটনের জন্য বিদেশ থেকে এখন মালয়েশিয়া যাওয়া বন্ধ আছে।

বর্তমানে স্পাউস, বিজনেস এবং প্রফেশনাল ভিসায় মালয়েশিয়ায় যাবে। তবে যাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দেশে মালয়েশিয়ার দূতাবাসের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

মালয়েশিয়া ঢোকার আগে বিমানবন্দরে তাদের অবশ্যই ‘কোভিড-১৯ মুক্ত’ সনদ দেখাতে হবে। যদি সেটি না থাকে তাহলে মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।

যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের বিমান চলাচল এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে ঢাকা থেকে লন্ডন যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ মুক্ত সনদের প্রয়োজন নেই। তবে একটি হেলথ ডিক্লারেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে।

এছাড়া লন্ডনে পৌঁছানোর পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তবে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে যারা ভিসা পেয়েছিলেন তারাই এখন যেতে পারছেন।

অতি প্রয়োজনীয় না হলে মহামারির এই সময় নতুন করে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্র

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কোনো বিধি-নিষেধ নেই। ঢাকা থেকে যেসব এয়ারলাইন্স ফ্লাইট চালু করেছে তাদের মাধ্যমে ভ্রমণ করা যাবে।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের একটি সূত্র জানিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারির সময় নতুন কোন ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না। যাদের পুরনো ভিসা আছে শুধু তারাই ভ্রমণ করতে পারবেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + 18 =

Back to top button