বিবিধ

‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ দিনে এক মণ খাবার খায়

করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানির পশুর হাট কতটুকু জমবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে এসব দুশ্চিন্তা পাশ কাটিয়ে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় আলোচনায় রয়েছে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’। এটি একটি কালো ষাঁড় গরু। যার দৈর্ঘ্য ৯ ফুটের বেশি। উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। গরুটির ওজন ৩৬ মণ। এটি বেড়ে উঠেছে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে।

ব্রাহমা জাতের ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জন্ম নেয়া ব্ল্যাক ডায়মন্ডের মালিক মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং এলাকার মো. শরিফ ঢালী। কালো বর্ণের ষাঁড়টির শরীরের আকারে সন্তুষ্ট হয়ে ভালোবেসে মালিক নাম দিয়েছেন ব্ল্যাক ডায়মন্ড।

ব্ল্যাক ডায়মন্ড এবার কোরবানির হাট কাঁপাবে বলে ধারণা খামারির। গরুটি এবার সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হবে বলে ধারণা তার। মালিক ষাঁড়টির দাম হেঁকেছেন ২০ লাখ টাকা। ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন মানুষ শরিফ ঢালীর বাড়িতে ভিড় করছেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরিফ ঢালী সাড়ে চার বছর আগে সরকারিভাবে ব্রাহমা জাতের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে তার পালিত গাভি থেকে জন্ম নেয় ব্ল্যাক ডায়মন্ড। জন্মের পর ষাঁড়টির ওজন ছিল প্রায় দুই মণ। এরপর দেশীয় প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরুটি মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যায় গরুর আকৃতি বাড়তে থাকে। ষাঁড়টি ছিপছিপে কালো হওয়ায় আদর করে নাম দেন ব্ল্যাক ডায়মন্ড। দিন দিন ওজন বেড়ে গরুটি ৩৬ মণে এসে দাঁড়ায়। এ বছর গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন শরিফ।

ব্ল্যাক ডায়মন্ডের খাদ্যতালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভুসি ও ধানের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, তৈলবীজের খৈল, ছোলা, আলু, কলা, কাঁঠাল ও খুদের ভাত। সব মিলিয়ে গরুটি প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক মণ খাবার খায়। এতে খরচ হচ্ছে ৮০০ টাকা। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিন দিন বাড়তে থাকে। বর্তমানে গরুটির ওজন প্রায় ৩৬ মণ।

শরিফ ঢালী বলেন, এ ধরনের গরু লালন-পালন খুবই ব্যয়বহুল ও কষ্টের। পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে আমরা গরুটি পালন করেছি। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন নিয়ে বড় করেছি। অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। গরুটিকে দেখভাল করার জন্য আলাদা করে বছরব্যাপী মানুষ কাজে রাখতে হয়েছে। সাড়ে চার বছরে প্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ২০ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে চাই। গরুটি এখন আমার বাড়িতেই রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ির উঠানে দুটি মোটা দড়িতে বেঁধে রাখা হয়েছে ষাঁড়টি। এটি দেখতে তার বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে মানুষ।

আর্শাদ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি জানান, শরিফ ঢালী শখের বসে গরুটি লালন-পালন করে আসছেন। আমাদের জানামতে ব্ল্যাক ডায়মন্ড এই জেলার সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় গরু। এর আগে এত বড় গরু এখানে দেখা যায়নি।

মো. নাসির হোসেন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, যারা গরু লালন-পালন করতে চান তারা শরিফ ঢালীকে অনুসরণ করতে পারেন। তিনি দেখিয়েছেন একটি গরু লালন-পালন করে কীভাবে লাখপতি হওয়া যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + 10 =

Back to top button