কেন নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায় না একটি প্রকল্প, দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও কেন প্রকল্পের কাজ শেষ হয় না, তা নিয়ে এর আগেও অনেকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উন্নয়ন প্রকল্পের ধীরগতিতে আবারও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় বাড়ছে অথচ প্রকল্পে গতি নেই, কারো কাজের মধ্যে সমন্বয় নেই—প্রকল্প বাস্তবায়নে এসব দীর্ঘসূত্রতা দূর করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল একনেক সভায় যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করতে হলে এর প্রভাব কী হতে পারে সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত সমীক্ষা করতে হবে। সমীক্ষার কাজ শেষ করে সাবধানে বাঁধ নির্মাণের কাজে হাত দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বৈঠকের বিস্তারিত জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
‘খুলনা শিপইয়ার্ডের সড়ক প্রশস্ত উন্নয়ন’ শিরোনামের একটি প্রকল্পে ধীরগতি দেখে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, খুলনা শিপইয়ার্ডের সড়ক প্রশস্ত ও উন্নয়ন করার প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সাত বছর পর দেখা গেল, প্রকল্পটির অগ্রগতি মাত্র ৩০ শতাংশ। অথচ প্রকল্পটি শেষ করতে আরো দুই বছর সময় চাওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় বেড়েছে ১০৫ শতাংশ। ৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প এখন ২৫৯ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অন্যদিকে মেয়াদ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। এর কারণ হলো সমন্বয়ের অভাব এবং মূল কাজের বাইরে বিভিন্ন কাজ যোগ করায় গতি মন্থর হয়েছে। এখন থেকে আমরা এই বিষয়গুলো কঠোরভাবে দেখব।’
এম এ মান্নান বলেন, এখন থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ কিংবা রাবার ড্যাম নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, প্রকৃতির সঙ্গে খেলতে গেলে সাবধান হতে হবে। কেননা একদিকে ভাঙন রোধ করা হলে দেখা যাবে অন্যদিকে ভেঙে সব কিছুই শেষ করে দিচ্ছে। তাই এখন থেকে বাঁধ হোক বা রাবার ড্যাম হোক, সুদূরপ্রসারী গবেষণা থাকতে হবে।