সব সরকারি কর্মকর্তাকেই অফিস করতে হবে
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসা থেকে অফিসের কাজ করার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এখন তাদের স্বাভাবিক সময়ের মতোই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিসে উপস্থিত থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সচিব বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ে (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগের নিয়মে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে হবে। তবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে যারা অসুস্থ ও সন্তানসম্ভবা তাদের বিষয়ে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাসায় থেকে কাজের সুবিধা পাবেন তাঁরা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয় নিজেরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যে নির্দেশনা রয়েছে তারাও সেইভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আজ গণমাধ্যমকে বলেছেন, গত ৩ আগস্ট এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ওই নির্দেশনা পেয়ে অনেক মন্ত্রণালয় এরমধ্যে তা মৌখিকভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানিয়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের শতভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক অফিস করছেন। অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতেও সবাই একসঙ্গে অফিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় গত ২৫ মার্চ সাধারণ ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। তার আগে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
কয়েক দফায় এ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয় ৩০ মে পর্যন্ত। সর্বশেষ গত ২৮ মে বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে নিজ নিজ কাজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যোগদানের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অসুস্থ, বয়স্ক ও সন্তানসম্ভবা নারীদের এ নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়।
প্রজ্ঞাপনে সীমিত আকারে গণপরিবহন উন্মুক্ত করার কথা বলা হয় ৩১ মে থেকে। সেইসঙ্গে লঞ্চ ও রেলগাড়ি চলবে কাল থেকে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধই থাকছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৩ মার্চ সরকার প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে দ্বিতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত, তৃতীয় দফায় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ও চতুর্থ দফায় ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বর্ধিত করা হয়। এর পরও পরিস্থিতির উন্নত না হওয়ায় পঞ্চম দফায় ১৬ মে এবং সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি বৃদ্ধি করে সরকার।
সাধারণ ছুটির সময় জরুরি পরিষেবা প্রদানের সঙ্গে জড়িত সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং তাদের অধীন অফিসগুলো বর্ধিত সাধারণ ছুটির দিনে সীমিত আকারে খোলা ছিল।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যেই গত ২৬ এপ্রিল কিছু পোশাক কারখানা পুনরায় চালু করা হয় এবং কারখানার মালিকরা দাবি করেন যে, তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে শুধু ঢাকায় উপস্থিত কর্মীদের মাধ্যমে কাজ করছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে সর্বপ্রথম চীন থেকে সংক্রমণ শুরুর পর করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯-এ পর্যন্ত ছড়িয়েছে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে।