জাতীয়

গুজবে কান দেবেন না, আমরা ভালো আছি : শিপ্রা- সিফাত

পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের দুই সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ এখন কারামুক্ত। তাঁরা সুস্থ ও নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে কক্সবাজারের একটি হোটেলে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তাঁরা।

মেজর সিনহা নিহত হওয়ার সময় প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন সিফাত। গুলি করার পর পুলিশ সিফাতকে ঘটনাস্থল থেকে এবং শিপ্রাকে হিমছড়ির নীলিমা বিচ রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনটি মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। আদালতের নির্দেশে শিপ্রা গত রোববার এবং সিফাত গতকাল সোমবার কক্সবাজার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।

কক্সবাজারে তাঁরা সাংবাদিকদের বলেন, কিছুদিন সময় দেন। সিনহা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা যা জানেন, সেটাই বিস্তারিত জানাবেন।

শিপ্রা দেবনাথ বলেন, ‘প্লিজ, প্রে ফর আস। সিফাত এবং আমি আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, পাশে থাকবেন। আপাতত এতটুকুই বলার আছে। আমরা প্রত্যেকটা কথা বলব। প্রত্যেকটা সত্যি বলব। একটু সময় দেন। প্রচুর গুজব শোনা যাচ্ছে। আমরা বিভ্রান্তিমূলক নিউজ চাই না। দয়া করে কেউ গুজবে কান দেবেন না।’

সিফাত বলেন, ‘আমরা ভালো আছি। শারীরিকভাবে আমরা ভালো আছি। কোনো ধরনের গুজব না ছড়ালেই ভালো হয় মামলার সুষ্ঠু বিচারের জন্য।’  

সিফাত বলেন, তিনি কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে বের হওয়ার পর একটি নম্বরবিহীন গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে যেই গুঞ্জনটি গণমাধ্যমে ছড়িয়েছে; সেটি ঠিক নয়। ওই গাড়িটি তাঁর পারিবারিক গাড়ি ছিল বলে জানান সিফাত।

সিফাত আরো বলেন, ‘মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। আমার পায়ে গুলি লেগেছে বলে গুজব ছড়িয়েছে। এটা ভুল, আমার পায়ে আসলে গুলি লাগেনি। আশা করি, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হবে। আমাদের একটু সময় দেন। আমরা সত্য ঘটনা বলব।’

কারাগারে থাকাকালে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সহপাঠী ও শিক্ষকরা এবং এলাকার লোকজন তাঁর মুক্তির জন্য সরব হয়েছে বলে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন সিফাত। এ মামলার বিচারের বিষয়ে আগ্রহী হয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান সিফাত।  

এদিকে স্বজনরাও বলছেন, শিপ্রা ও সিফাত দুজনই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। তাঁরা দুজনই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রয়েছেন।

গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আসার পথে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে তল্লাশির নামে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট তাঁর বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − ten =

Back to top button