সিনহা হত্যা: যে অভিযোগে এপিবিএনের তিন পুলিশ গ্রেপ্তার
বাংলাদেশে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের তিনজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
এর মধ্যেই তাদের র্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এপিবিএন সদস্যদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ
র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই চেকপোস্টটি এপিবিএন পরিচালনা করছিল। অভিযুক্ত সদস্যরা সেই সময় সেখানে দায়িত্ব পালন করছিলেন। মেজর (অব) সিনহার গাড়িটিও এই সদস্যরা থামিয়েছিলেন।
মামলার তদন্তে ঘটনার সময় এপিবিএনের এই সদস্যদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে তারা লিয়াকতসহ অন্য অভিযুক্ত সদস্যদের সহায়তা করেছিলেন বলে তদন্তে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের কর্মকর্তারা।
বাহারছড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ লিয়াকতের গুলিতে তিনি নিহত হলেও এই চেকপোস্টটি পরিচালনা করছিল এপিবিএন।
গ্রেপ্তার করা তিনজনের একজন এপিবিএনের সহকারী উপপরিদর্শক এবং অন্য দুজন কনস্টেবল। ঘটনার দিন এই তিনজনই এপিবিএনের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করেছেন।
র্যাব জানিয়েছে, এই কারণে সোমবার এপিবিএনকে চিঠি দিয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা। ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর তাদের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের গ্রেপ্তারের দেখানোর শুরু করা হয়েছে।
তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হলে এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াবে দশজনে।
ওসি প্রদীপ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকতসহ তিন পুলিশকে রিমান্ডে নিচ্ছে র্যাব
মেজর (অব) সিনহা মোঃ রাশেদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কক্সবাজার টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে আজ রিমান্ডে নেবে র্যাব।
মঙ্গলবার সকালে র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বিবিসিকে জানিয়েছেন, ”তিনজনকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য র্যাবের একটি গাড়ি কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছে।”
গত ৩১শে জুলাই রাতে কক্সবাজারের একটি পুলিশ চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ। সেই ঘটনায় পুলিশ দুইটি মামলা করে।
পাঁচই অগাস্ট এই ঘটনায় নয়জন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন মেজর (অব) সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার। এই মামলা ও পুলিশের মামলা দুইটির তদন্তভার র্যাবকে দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটিও এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করছে।
পরে সাতজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপর দুইজনের নামে কোন পুলিশ সদস্য নেই বলে জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এর মধ্যেই তারা চারজন পুলিশ সদস্য ও পুলিশের মামলার তিনসাক্ষীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব।