দেশবাংলা

থুতনি-ব্যাগে-পকেটে মাস্ক, মুখ খোলা

করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় মাস্ক আছে অনেকেরই। তবে সেটা কারও পকেটে, কারও হাতে, কারও ব্যাগে আবার কারও নাক-মুখের নিচে বা থুতনিতে ঝোলানো। অর্থাৎ মাস্ক পরার যেন আর দরকারই নেই। এমনই চিত্র দেশের শহর আর গ্রামগঞ্জের। আর সামাজিক দূরত্বের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানাও দূর হয়েছে অনেক আগে।

করোনা রোধে দেশে আরোপিত লকডাউন জীবন ও জীবিকার তাগিদে শর্তসাপেক্ষে কিছুটা শিথিল করেছে সরকার। খুলে দেয়া হয়েছে গার্মেন্টসসহ বেশির ভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান। গণপরিবহন চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। দোকান, মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। কিন্তু সরকারের দেয়া বিধিনিষেধ ও শর্ত ফেনীর কোথাও মানা হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকিও।

তেমনই অবস্থা ফেনীতে। ফেনী শহরে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা, বাস ও ট্রাক চলাচল করছে। মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করছে মানুষজন। বেশির ভাগ জায়গায় মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব, মানা হচ্ছে না সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি।

শহরের অলিগলিতে চায়ের দোকানগুলোতে মুখে মাস্ক ছাড়াই সবাই আড্ডায় মেতে থাকছেন। মুদি দোকানগুলোতে ভিড় হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই। দোকানদার কিংবা ক্রেতারা, কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।

ফুটপাত, দোকান ও মার্কেটগুলো দেখে বোঝাই মুশকিল যে দেশে করোনাভাইরাস নামে ভয়াবহ কোনো সংক্রমণ ব্যাধি আছে। মার্কেটের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ থাকলেও তা পর্যাপ্ত নেই। প্রতিটি দোকানের সামনে হাত ধুয়ার ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ থাকলেও দোকানিরা তা মানছেন না।

শহরের প্রধান সড়ক ট্রাংক রোডের ফুটপাতে ফলের দোকান রয়েছে আবুল হোসেনের। তার মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে বলেন, মাস্ক আছে তবে পকেটে। মহিপালের খোলা বিস্কুট বিক্রেতা শংকর দাশেরও মুখে মাস্ক নেই। কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি।

এ রকম বহু মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। কারণ হিসেবে সুগন্ধা সুপারের এক বাসযাত্রী বলেন, ‘প্রচুর রোদ আর গরম, মাস্ক পরলে আরও বেশি গরম লাগে। তাই পরি নাই। অনেক মানুষই তো পরছে না।’

এ বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) গোলাম জাকারিয়া বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে সচেতন না হলে ফেনীর ১৬ লাখ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। যারা বিধি মানবে না তারাই বিপদে পড়বে।’

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক লোকের জরিমানা করেছি। সব সময় জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।’

সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘আমরা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দফা মাস্ক, ডেটল সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছি। চেষ্টা করেছি জনগণকে সচেতন করে করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে রক্ষা করতে। আগামীতে তা অব্যাহত থাকবে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 2 =

Back to top button