সীমান্তে আবার ভারত-চীন সংঘর্ষ, ভারতীয় সেনা নিহত
আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছে চীন-ভারত। গত রবিবার রাতে হিমালয় সীমান্তে চীনা সেনাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ভারতীয় বিশেষ বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরেক ভারতীয় সেনা। গতকাল মঙ্গলবার(২ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে দ্য গার্ডিয়ান এই তথ্য জানায়। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত হওয়ার তথ্য ভারত বা চীন কেউ স্বীকার করেনি।
দুই মাস আগে হিমালয় সীমান্তে এক ভয়াবহ সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর সীমান্তে সৈন্য সংখ্যা বাড়ায় দুই দেশই। কয়েক দিন চুপচাপ থেকলেও আবারও ধীরে ধীরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। নতুন করে সীমান্ত উত্তেজনার জেরে প্রথম কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া গেল।
নির্বাসনে থাকা তিব্বতীয় পার্লামেন্টের সদস্য নমগ্যাল দোলকার লাঘারি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, শনিবার রাতের সংঘর্ষে তিব্বতের বংশোদ্ভূত এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। আরেকজন আহত হন।
নমগ্যাল জানান, নিহত সেনা ভারতের স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের (এসএফএফ) সদস্য। তিনি তিব্বতীয় বংশোদ্ভূত। তবে নিহত ভারতীয় সেনার নাম জানা যায়নি।
দুই আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে এই উত্তেজনা থেকে বড় ধরনের সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাস দুয়েক আগে চীনা সেনাদের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতে ভারতের ২০ সেনা নিহত হয়েছিলেন। সেই সংঘাতে চীনা সেনারাও হতাহত হন। তবে তারা কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
গত সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, লাদাখে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেনি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, চীনা বাহিনী স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে এগোচ্ছিল। তাদের আগ্রাসন ভারতীয় বাহিনী ব্যর্থ করে দিয়েছে। তবে চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সবশেষ উত্তেজনার জন্য দুই পক্ষ পরস্পরকে দোষারোপ করেছে।
গত সপ্তাহেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর লাদাখ সংঘাত নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে এত কঠিন পরিস্থিতি আর তৈরি হয়নি। পাল্টা বিবৃতি দিয়েছিলেন চীনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র। তাঁর বক্তব্য, ভারত এবং চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য দু’দেশকেই যথেষ্ট আন্তরিক হতে হবে। নিজেদের মধ্যে বিবাদ মেটানোর রাস্তা খুঁজে বার করতে হবে।
অন্য দিকে, ভারতের সামরিক বাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াতও গত সপ্তাহে বলেছিলেন, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক আলোচনা ভেস্তে গেলে চীনকে সামরিক শক্তি দিয়ে জবাব দিতে প্রস্তুত ভারত। গত সপ্তাহের ওই বিবৃতি যুদ্ধের পরেই নতুন করে সংঘাত হলো কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে কূটনৈতিক মহলে।