হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওয়াহিদা খানমের মাথায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে চিকিৎসক বলেছেন, তাঁর অবস্থা উন্নতির দিকে তা এখনই বলা যাবে না।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন আজ শুক্রবার সকালে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ইউএনওর অপারেশন শেষ হয়। তাঁর জ্ঞানও ফিরেছে। আজ শুক্রবার সকালে তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। এটা পজিটিভ দিক। কিন্তু এখনই আমি বলতে চাই না, তাঁর অবস্থা উন্নতির দিকে।’
ডা. জাহিদ হোসেন আরো বলেন, ‘মাথায় মোট নয়টা বাড়ির আঘাত ছিল। একটি খুবই গুরুতর। মাথার খুলির একটি হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। অপারেশনটা মূলত ওই হাড়টার জন্যই করা হয়েছে। হাড়টি আমরা বের করে ফেলেছি। তাঁর অবস্থা উন্নতির দিকে কিনা, তা আরেকটু সময় নিয়ে বলতে চাই আমি।’
গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। তারা বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানমকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় ইউএনওর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা তাঁর বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাঁকেও আঘাতে জখম করে। পরে কোয়ার্টারের অন্য বাসিন্দারা তাদের চিৎকার শুনে পুলিশকে খবর দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদা খানমকে ঢাকায় আনা হয়। তাঁর বাবা রংপুরে চিকিৎসাধীন।
রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে ও হাসপাতালে আনার পর সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টা পর এ জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, নওগাঁ থেকে মাঝেমধ্যে মেয়ে ওয়াহিদা খানমের বাসায় বেড়াতে যেতেন তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবা ওমর আলী শেখ। ওয়াহিদা খানমের স্বামী রংপুরের পীরগঞ্জে ইউএনও হিসেবে কর্মরত আছেন।