করোনাভাইরাসঃ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রিতে বিশ্ববাজারে শক্তিশালী অবস্থানে বাংলাদেশ
কোভিড-১৯ মহামারির শুরুর দিকে পিপিই ও মাস্কের মতো স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে সংকটে ছিল বাংলাদেশ। তবে সময়ের সাথে বর্তমানে এসব সামগ্রী রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করছে বাংলাদেশ।
গত কয়েক মাসে ৭১টি দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। আবার ক্রয়াদেশ বাড়তে থাকায় এ খাতে নতুন করে বিনিয়োগও শুরু করেছেন অনেক পোশাক কারখানার মালিক।
গেল মার্চ মাসে বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের ব্যবহৃত পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুপমেন্ট-পিপিই এবং মাস্কের সংকট দেখা দেয়। দেশজুড়ে এক প্রকার হাহাকার চলছিলো গুরুত্বপূর্ণ এসব উপকরণের। এর মাঝে পুরাতন কার্যাদেশ হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়া দেশের তৈরি পোশাক খাত এগিয়ে আসে এসব স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রস্তুত করতে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে শুরু হয় বিদেশেও রপ্তানি।
নতুন ধরনের পণ্য তৈরিতে যখন জোর দেয়া হচ্ছে ঠিক তখন বাধ্য হয়ে নতুন ধরনের এসব উপকরণ তৈরি প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, করোনাকালে পৃথিবীব্যাপী যে চাহিদা সেখানেও আমরা অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। এটা একদিকে যেমন ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি তেমনি স্বাস্থ্য সংকটের মুহূর্তে মানবিক অবদানও বটে।
বর্তমানে দেশের অন্তত ৪৫টি পোশাক কারখানায় তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের পিপিই, মাস্ক, মাথার টুপি, অ্যাপ্রোন, হাসপাতালের বেডশিট, ফেসকাভারসহ নানা উপকরণ। কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ৫০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যমানের উপকরণ পাঠানো হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম দু’মাসে (জুলাই ও আগস্ট) পিপিই রপ্তানি হয়েছে সাড়ে ১৩ কোটি মার্কিন ডলারের।
এসব সামগ্রীর ক্রয়াদেশ পাওয়ার পেছনে পণ্যের মান ও সময় সরবরাহ করতে বাংলাদেশের যে সুনাম আছে তা অনেক বড় ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি এ এম চৌধুরী সেলিম।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরো জোনের দেশ, ব্রাজিলসহ আরও অনেক দেশ থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর বড় আকারে ক্রয়াদেশ আসছে।
ব্যবসায়ীদের মতে, করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র পিপিই এবং অ্যাপ্রোন ও গাউন রপ্তানি হয়েছে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলারের। এছাড়া, ১ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলারের তিন স্তরের সার্জিকাল মাস্কও রপ্তানি হয়েছে। এমন এক সময় এসব পণ্যের ক্রয়াদেশ আসছিল যখন গতানুগতিক পণ্যের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত করছিলেন ক্রেতারা।