গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন,‘ দেশে আজ দুর্নীতি কোথায় পৌঁছেছে, সবচেয়ে বড় দুর্নীতি সরকার স্বয়ং। এখানে মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার হরণ করে, এখানে মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তার চেয়ে বড় দুর্নীতি কি হতে পারে? মালেকের দুই তলা, সাত তলা দুটা বাড়ি, আফজালের দশটা বাড়ি, বা দশ কোটি থেকে অনেক বেশি দুর্নীতি আমি মনে করি সরকারের। সরকার তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ অন্যান্যদের গ্রেফতার-নিপীড়ন- হয়রানি ; ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরসহ সারা দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা ও সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সরকারের অন্যায় আচরণ দেশকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আজকে সরকারকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই, এখনও সময় আছে, সংশোধন প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, দুর্নীতি বন্ধ করতে চাইলে আগে নিজের বাড়ি থেকে ঠিক করতে হয়। শুরু করতে হবে নিজের বাড়ি থেকে। কেবল অন্যেরটা দেখবো, আমারটা দেখবো না এটা হতে পারে না।
ভিপি নুর প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,‘আজকে আমি খুব বেশি মর্মবেদনায় আছি। আজকে ভিপি নুর … সে যদি অন্যায় করে থাকে, সেটার বিচার হবে। তা বলে তাকে হয়রানি করা যাবে না। ছাত্র রাজনীতি একটা প্রসেশন করে, তাদের বের হতে দেবেন না, সেটা তো হয় না। আপনারা জনগণকে বের হতে দিচ্ছেন না। সেজন্য দেশটা নৈরাজ্যের দিকে চলছে।’
ছাত্র পরিষদের উপর পুলিশি ধরপাকড়ের সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,‘যখন দেশে অনাচার বেড়ে যায়, ব্যথায় মানুষ নীল হয়ে যায়, তখনই ছাত্রসমাজ জাগে, ছাত্রসমাজ সচেতন করে। যখন চূড়ান্ত রকম অব্যবস্থাপনা তখনই ছাত্রসমাজ রাস্তায় নামে। সেদিনও যারা রাস্তায় নেমেছে, তারা কি গাড়ি ভেঙ্গেছে? কাউকে মেরেছে? পুলিশ লাঠিসোটা দিয়ে তাদের উপর হামলা করে পরে উল্টা তাদের নামে মামলা দিয়েছে।’
‘এ জাতীয় স্বৈরাচার নীতি কখনও দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। আজকে প্রয়োজন ন্যায়-নীতি, সুষ্ঠু সুশামন; সুশাসন না হলে হবে না।’ বলেন জাফরুল্লাহ।
পেঁয়াজ আমদানি ইস্যুতে ভারতের সমালোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি।
‘ভারতের হঠাৎ অনৈতিকভাবে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়ে পঁচা পেঁয়াজ পাঠানো। এ জাতীয় খেলা নিয়ে আমরা তো কখনও সাহস করে বলতে পারি না।’
তিনি বলেন,‘ভারতের সঙ্গে কিসের বন্ধুত্ব? যে বন্ধু আমার স্বার্থ দেখে না, যে বন্ধুত্ব একতরফা তা বন্ধুত্ব হতে পারে না। শোষকের সাথে শাসিতের বন্ধুত্ব হয় না।’
ভারতের করোনার টিকা বাংলাদেশে ট্রায়াল করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘ভারত তো অন্যের জন্য ঠিকাদারি করছে। ভারতের তো এটা নিজস্ব আবিষ্কার বা কিছু না। একটি আন্তর্জাতিক জায়গায় গেলেও ভারতীয়রা নিজেদের সবসময় ভারতীয় ভাবে, কিন্তু আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক ভাবি। ফলে আমাদের স্বার্থ আমরাই রক্ষা করতে পারি না।’