যেভাবে ভাঙ্গনের কবলে ড. কামালের গণফোরাম
শেষ পর্যন্ত ভেঙেই গেলো ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। দলটি থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি অংশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু।
নবগঠিত অংশটি আগামী ২৬ ডিসেম্বর দলটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলও ঘোষণা করেছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের বর্ধিত সভা শেষে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ঐ কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়া হয়। তো কি কারণে ভাঙ্গনের কবলে গণফোরাম?
বলা হচ্ছে, সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে ড. কামালের ক্রমাগত নিষ্ক্রিয়তাই দলটিকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এছাড়া দলের ভেতর ক্রমবর্ধমান কোন্দলও একটা বড় কারণ বলে জানা যায়। তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে, বর্ধিত সভায় ড. রেজা কিবরিয়াসহ বেশ ক’জন নেতাকে বহিষ্কারের ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এ কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে বর্ধিত সভায় সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
প্রশ্ন ছিল, গণফোরাম নামের আরেকটি দল গঠন করতে যাচ্ছেন কী? জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বললেন, ‘২৬ ডিসেম্বরের কাউন্সিলে উপস্থিত ডেলিগেটদের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
আরেকটি প্রশ্ন ছিল, ড. কামাল হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কী? জবাবে মন্টু বলেন, ‘আমরা এখনও বিশ্বাস করি ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে আসবেন। বির্তকিত লোকদের পরিহার করবেন। মাঠের পোড় খাওয়া লোকদের নিয়ে এগিয়ে যাবেন। আর তিনি না আসলে তার বহিষ্কারের বিষয়ে আমাদের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নিবো।’
‘২৬ ডিসেম্বরের সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা আসবে, তাদের মতামতের সাপেক্ষে তার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো’ বললেন তিনি।
জানতে চাওয়া হয়েছিল, আপনারা কী তাহলে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন? উত্তরে মন্টু বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের বিষয়ে আমরা এখনো কোনও সিদ্ধান্ত নিবো না। সামনে আমাদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মিটিং আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
‘আপনাদের ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জামায়াত’ এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিলো না।’
এছাড়া ‘অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষে গণফোরাম জাতীয় ঐক্য চায়’ বলেও মন্তব্য করেন মন্টু।
‘গণফোরামের কয়টি জেলার প্রতিনিধি বর্ধিত সভায় আছে’ এ মর্মে জানতে চাইলে দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সাথে দলটির ৫২ জেলার ২৮৩ জন প্রতিনিধি উপস্থিত আছেন।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম প্রমুখ।