স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আয়ের সম্ভাবনা; সেবা নেবে নেপাল
Online Bangla News: Positive News Today
এবার বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জনের দ্বার উন্মোচন হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে। স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলো এতদিন বিদেশি স্যাটেলাইট কোম্পানির কাছ থেকে ক্যাপাসিটি কিনলেও এবার দেশীয় একমাত্র স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর সেবা বিদেশে বিক্রি করা হবে।
দেশের একমাত্র স্যাটেলাইটের কাছ থেকে ক্যাপাসিটি কিনতে এরই মধ্যে আলোচনা প্রায় শেষ করে এনেছে নেপালের একটি ডিটিএইচ কোম্পানি। তারা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই ১-এর পাঁচটি ট্রান্সপন্ডার কিনবে।
আলোচনা শেষে দরদাম চূড়ান্ত করার কথা চলছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)। পাহাড়ঘেরা দেশ নেপালের নিজস্ব কোনো স্যাটেলাইট নেই সেখানে ইতিমধ্যেই একই সঙ্গে চারটি স্যাটেলাইট সেবা দিচ্ছে বলে জানা যায়।
বিদেশের বাজারে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে যে দামে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি বিক্রি করছে তার চেয়েও কম দামে নেপালে ক্যাপাসিটি বিক্রি করা হতে পারে। বলা হচ্ছে, বাজার ধরতেই এ প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে সরকারি কোম্পানিটিকে, সূত্র যুগান্তর।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, আগে থেকেই আমরা আলোচনা করছিলাম কীভাবে আমাদের স্যাটেলাইটের সক্ষমতা বিদেশে বিক্রি করা যায়। এবং সে লক্ষ্যে মার্কেটিংও করা হয়েছে। নেপাল আমাদের স্যাটেলাইট থেকে সেবা নিতে আগ্রহী হয়েছে অবশ্যই এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত সুখবর যে, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমরা আমাদের স্যাটেলাইটের সক্ষমতা বিদেশে বিক্রি করে দেশে টাকা নিয়ে আসব।
আর কম দামে ক্যাপাসিটি বিক্রি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এখন সর্বত্রই প্রতিযোগিতা চলছে বাজার ধরতে এবং এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতেই কিছুটা কম মূল্যে নেপালের বাজারে ক্যাপাসিটি বিক্রির কথা ভাবা হচ্ছে।
বর্তমানে দেশের মধ্যে টেলিভিশনগুলোর কাছে প্রতি মেগাহার্টজ ক্যাপাসিটি মাসে সাড়ে তিন হাজার ডলার মূল্যে বিক্রি করছে বিসিএসসিএল। কিন্তু নেপালে দুই হাজার ডলারের মধ্যে বিভিন্ন স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি মিলছে।
সুতরাং প্রতিযোগিতা করতে হলে সেখানে বিসিএসসিএলকে মূল্য কমাতেই হবে। তবে এর আগে বাংলাদেশের টেলিভিশনগুলো স্টার অ্যালায়েন্সের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার ডলারে ক্যাপাসিটি কিনত।
এর বাইরে ফিলিপাইন থেকে অন্তত চারটি ট্রান্সপন্ডার ক্যাপাসিটি বা ১৪৪ মেগাহার্টজ ব্যান্ডউইথ কেনার জন্য আলোচনা করছে একটি কোম্পানি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় হওয়ায় ফিলিপাইনের মতো আশপাশের দেশগুলোকে এ স্যাটেলাইটের ফুট প্রিন্ট সবচেয়ে ভালো পড়েছে। ফিলিপাইনসহ আশপাশের দেশগুলোর বাজার টার্গেট করে সেখানে একটি ল্যান্ডিং স্টেশনও করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এর আগে স্যাটেলাইটের মোট ক্যাপাসিটির অর্ধেকটা দেশের মধ্যে ব্যবহার করে বাকি অর্ধেক দেশের বাইরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করার পরিকল্পনা করলেও এখন সেখান থেকে তারা খানিকটা সরে আসছেন বলেও জানান শাহজাহান মাহমুদ।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১-এর মোট সক্ষমতা রয়েছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। যেখান থেকে এরই মধ্যে দেশের ভেতর বিক্রি হয়ে গেছে ২৬ শতাংশ। এ থেকে বিসিএসসিএলের মাসে আয় হচ্ছে ১০ কোটি টাকার বেশি। খবরঃ Online Bangla News
গত ১১ মে ২০১৮ নিজ কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করার পর নভেম্বরে এটি বিসিএসসিএলকে বুঝিয়ে দেয় স্যাটেলাইটটির নির্মাতা কোম্পানি থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস। সে কারণে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতেই একটু বিলম্ব হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিসিএসসিএল সংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে চালু থাকা বেসরকারি অন্যান্য স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলোর বেলায় তেমন কিছু উল্লেখ না করলেও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্তরা সেবায় আসতে হলে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকেই সম্প্রচার শুরু করতে হবে।