দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বর। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জনসমাগম ঘটতে থাকে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠনের প্রায় হাজারো মানুষকে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।
সারাদেশে ঘটমান নারী ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন ও নানাবিধ অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রশাসনের যথাযথ দায়িত্ব পালন এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে মানব কল্যাণমূলক সংগঠন ‘ব্লাজা’।
মানববন্ধন করেছে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী। যৌন হয়রানির প্রবণতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে সামাজিক প্রতিরোধের দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করছে বাংলাদেশ কনফেডারেশন অব লেবার (বিসিএল)।
সমাবেশে বক্তারা বিভিন্ন সময় সংঘটিত ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এবং হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে ক্ষোভে ফেঁটে পরেন। এক বক্তা বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা বলছে, আমেরিকা-ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে নারীরা নির্যাতন কম হয়’। ধর্ষণের ঘটনায় মন্ত্রীরা এই ধরনের কথা বলেন। তাহলে আমরা কোন দেশে বাস করছি?
আরেক বক্তা বলেন, তিন বছরের কন্যাশিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এরকম একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে এখন মানুষ বেশি এসব ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারছে। দেশে শতকরা ৮০টি ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায় না। বাকি ২০টি ধর্ষণের মধ্যে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়ায় ১০টি। তার মধ্যে শতকরা ৫টি ক্ষেত্রে ধর্ষকের শাস্তি হয়।
সমাবেশে বক্তারা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণচেষ্টা ও নির্যাতন, সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বিধবা নারীকে ধর্ষণ, ভোলার চরফ্যাশনে গৃহবধূকে ধর্ষণ, গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, কুষ্টিয়ার মিরপুরে মাদরাসার শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, রাজশাহীর গির্জায় ধর্ষণ, কিশোরগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণ, বরিশালের বাকেরগঞ্জে শিশুধর্ষণ, আশুলিয়ায় দুই কিশোরীকে ধর্ষণ, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে চার শিশুকে যৌন হয়রানি, খাগড়াছড়ি ও সাভারে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নারীর প্রতি সসিংসতা বন্ধে এবং এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।