রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে সাংসদ হাজী সেলিমের মালিকানাধীন বহুতল ভবনের ছাদের একটি কক্ষে ইরফান সেলিমের আরো একটি টর্চার সেলের সন্ধান পেয়েছে র্যাব।
ইরফান সেলিমের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজারের মদিনা আশিক টাওয়ারের ১৬ তলায় সোমবার আবারও অভিযান চালায় র্যাব। সন্ধ্যার পর শুরু হওয়া অভিযান রাত ৮টা ৩৪ মিনিটে শেষ হয়।
র্যাবের দাবি, ছাদের এই কক্ষটি হাজী সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিম টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতেন। সেখানে নির্যাতন করার সবধরনের উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই টর্চার সেল থেকে হাতকড়া, চাকু, হকিস্টিক, হিট দেওয়ার ট্রান্সমিটার, লাঠি, ছুড়ি, ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জাম, দড়ি, চোখ বাঁধার গামছা, হাতুড়ি, রড, মানুষের হাড়, ইলেকট্রিক শক দেওয়ার তার, নেটওয়ার্কিংয়ের কাজে ব্যবহৃত ওয়াকিটকিসহ টর্চারের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘টর্চার সেলে অভিযান পরিচালনার সময় সেখানে একটি হাড় পাওয়া গেছে। ফরেনসিক করার পর এই বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পরে ইরফান সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ’
জানতে চাইলে র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ‘আমরা মদিনা আশিক টাওয়ারের টর্চার সেলে অভিযান চালিয়ে হ্যান্ডকাফ, দড়ি, চাকুসহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করেছি। ’
র্যাব জানিয়েছে, মদিনা আশিক টাওয়ারের ভবনটি ১৬ তলা। চকবাজার এলাকার সবচেয়ে বড় ভবন এটি। ভবনের ১৬ তলায় হাজী সেলিম এর মালিকানাধীন মদিনা ডেভেলপারের অফিস। এর ওপরেই ছাদের একটি কক্ষে টর্চার সেলের খোঁজ পাওয়া গেছে। ওই কক্ষে ইরফান মাঝেমধ্যেই যাতায়াত করতেন।
ভবনের নিরাপত্তাকর্মী আব্দুল খালেক বলেন, মদিনা ডেভেলপারের অফিসে হাজী সেলিম নিজেও অফিস করেন। তার ছেলে ইরফান সেলিমও মাঝেমাঝে আসেন। তারা ছাদেও যান। তবে টর্চার সেলের বিষয়ে কোনো কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।
আগের রাতে ধানমণ্ডিতে নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে ‘মারধরের’ জেরে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় চকবাজারের ২৬ নম্বর দেবীদাস ঘাট লেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাংসদপুত্র মোহাম্মদ ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার করে র্যাব। একই সঙ্গে বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে ওইসব দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম।
ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা মিলিয়ে থাকতেন ইরফান সেলিম। সেখানে লাইসেন্সহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করেন র্যাব কর্মকর্তারা।