তথ্যপ্রযুক্তি

প্রযুক্তির ডানায় ধর্ম প্রচার

দ্বীনের অস্তিত্ব দাওয়াতের ওপর নির্ভরশীল। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হল দাওয়াত বা ধর্ম প্রচার। রাসূল (সা.) ধর্ম প্রচারে তার সময়ের আধুনিক সব পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তখন কুরাইশরা কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রচারের প্রয়োজন হলে সাফা পাহাড়ে উঠে উলঙ্গ হয়ে চিৎকার করত।

রাসূল (সা.) এ পদ্ধতিতে সাফা পাহাড়ের পাদদেশে লোকজনকে একত্র করে ধর্ম ও দ্বীনের কথা বলতেন। অবশ্য তিনি জাহেলি যুগের রেওয়াজ অনুযায়ী বিবস্ত্র হতেন না। এ ছাড়া তিনি ছিলেন আরবি সাহিত্য ও সংস্কৃতির স্বর্ণযুগের মানুষ। তাই তিনি বিশুদ্ধ ও অলঙ্কারপূর্ণ আরবি সাহিত্যের ব্যবহার করে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন।

প্রত্যেক নবী-রাসূলই ধর্ম প্রচারে কাজ করেছেন যুগশ্রেষ্ঠ মাধ্যমগুলোর ব্যবহার করে। মুসা (আ.)-এর সময় জাদু বিদ্যার জয়জয়কার ছিল। তিনি জাদুর বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়কে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। ঈসা (আ.)-এর সময় চিকিৎসাবিদ্যার প্রভাব ছিল। তাই তিনি আল্লাহ প্রদত্ত চিকিৎসা বিদ্যার মাধ্যমে দাওয়াতি কাজ করেছেন।

আজ প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার এ সময়ে মানুষকে আধুনিক পদ্ধতিতে দাওয়াত দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। এতে করে প্রযুক্তিনির্ভর মানুষ সহজে দ্বীন গ্রহণ করবে। ইসলামের সৌন্দর্য ও আদর্শ বিশ্ববাসীর কাছে যেমন দ্রুত পৌঁছবে তেমনি সহজে ফুটে উঠবে ইসলামের উদার, অসহিষ্ণু দৃষ্টিভঙ্গি।

আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমাদের প্রতিপালকের পথে মানুষকে ডাক প্রজ্ঞা ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে তর্ক করবে উত্তম পন্থায়’ (সূরা নাহাল : ১২৫)।

ইসলামের শাশ্বত বাণী পৌঁছাতে আপনি ঘরে বসেই মেইল, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইমো, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে দাওয়াতের কাজ করতে পারেন। এ জন্য আহ্বানকারীকে কোরআন, হাদিস, ফিকহ তথা ইসলামী জ্ঞানের পাশাপাশি সমসাময়িক জ্ঞান, ভাষাজ্ঞান এবং প্রযুক্তির জ্ঞানে পারদর্শী হতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে প্রযুক্তি একটি দু’ধারি তরবারি। এর ভালো-মন্দ দুটি দিক রয়েছে। প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে আপনার ইহকাল-পরকাল ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে। এ জন্য একজন ধর্ম প্রচারককে প্রযুক্তি ব্যবহারে সর্বোচ্চ সর্তক থাকা উচিত।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবে আর তারাই হল সফল’ (সূরা আল-ইমরান-১০৪)।

নবী-রাসূলদের দাওয়াতের পদ্ধতি থেকে জানা যায়, দাওয়াতের কর্মকৌশল নির্ধারণ হয় সমকালীন পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে। তাই ইসলামকে যুগোপযোগী করে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − eight =

Back to top button