Lead Newsরাজনীতি

আল্লামা শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক, হত্যা মামলা চক্রান্ত : বাবুনগরী

হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মুত্যুকে ‘স্বাভাবিক’ উল্লেখ করে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের চক্রান্ত’ বলে দাবি করেছেন হেফাজত ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) হাটহাজারী মাদরাসা মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের আমির এবং হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান হেফাজতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আবছার আজহারী।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হাটহাজারী মাদরাসা তৎকালীন শিক্ষা পরিচালক মাওলানা নুর আহমদকে পাশ কাটিয়ে শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী মাদরাসা পরিচালনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে কর্তৃত্ব নিয়ে নেন। আনাস মাদানী ছাত্রদের জোরপূর্বক ছাত্রাবাস ত্যাগে বাধ্য করেন। অনেক ছাত্রকে নির্যাতন করেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী ছাত্ররা মাদরাসায় বিক্ষোভ করেন।

এর প্রেক্ষিতে তৎকালীন পরিচালক আহমদ শফী মাদরাসার শুরা কমিটির বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে আনাস মাদানীকে মাদরাসা থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। এরপর মাদরাসায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে দায়ের মামলা প্রসঙ্গে বলা হয়, এটি হাটহাজারী মাদরাসার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং হেফাজত ইসলামের নেতাদের হয়রানি করার হীন চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু নয়। অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি করা হয়। না হলে দেশের ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে আলাপ করে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ এনে যে মামলা করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ও মন্ত্রীর কাছ থেকে ফায়দা লুটতে মামলাটি করেছে।

এ সময় সেই ‘দালালরা’ কারা জানতে চাইলে প্রশ্ন এড়িয়ে বাবুনগরী বলেন, সবাই তাদের জানে, নাম বলার দরকার নেই। সরকার বা কোনো মন্ত্রী-এমপি’র থেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার করার জন্য এ মামলা করেছে। হুজুর (আল্লামা শফি) অসুস্থ থাকার সময়ও উনাকে পুঁজি করে অনেক ফায়দা লুটেছে। ছাত্র-শিক্ষকদের হয়রানি করেছে। বুড়া বলে হুজুরের স্বাক্ষরিত একজন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন চিঠি ছিঁড়ে ফেলেছিল আনাস মাদানী। হুজুর আমাদের শ্রদ্ধার, উনাকে বুড়া বলা আমাদের জন্য বেদনাদায়ক।

আল্লামা শফীকে চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়নি দাবি করে বাবুনগরী বলেন, ‘আল্লামা শফী অসুস্থ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় সিনিয়র শুরা সদস্যরা সবাই উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আমরা সবাই হুজুর (আল্লামা শফী) আশেক, প্রেমিক। উনার ওপর নির্যাতন করার প্রশ্নই আসে না। যে অভিযোগ করছে তা বানোয়াট, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, প্রচার সম্পাদক নোমান ফয়জী, যুগ্ম-মহাসচিব কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনীর, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরিস নদভী, সহকারী যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রমুখ। এদের প্রায় সবাই আল্লামা শফীকে হত্যার দায়ে দায়ের করা মামলার আসামি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + fifteen =

Back to top button