নভেম্বরে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন করবে বাংলাদেশ
চলতি বছরের নভেম্বরে দুদিন ব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করবে বাংলাদেশ। আর তখন বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে।
রোববার (২৩ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষেই আগামী নভেম্বরে মাসে দুদিন ব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আয়োজন করবে বাংলাদেশ। এসময় বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রগতিশীল ও বুদ্ধিজীবীসহ সারা পৃথিবীতে যারা শান্তির জন্য কাজ করছে তাদের নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। এ সম্মেলনে বিশ্ব শান্তি ও মানবতার অগ্রদূত বঙ্গবন্ধুর ওপর আলোচনার আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে বাংলাদেশ শান্তির মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে শান্তির বাণী পৌঁছে দিচ্ছে এবং তা হচ্ছে, শান্তির সংস্কৃতি। জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশ শান্তির সংস্কৃতির প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। একে অন্যের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষের কারণে দেশে দেশে হানাহানি হচ্ছে। হিংসা-বিদ্বেষ দূর করতে পারলে আমরা পৃথিবীতে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন- বক্তব্যে যোগ করেন মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন শান্তির জন্য এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। সে কারণে তিনি বাংলাদেশের ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ এ পররাষ্ট্রনীতি প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। জুলিও কুরি পুরস্কার প্রাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু যেমন সম্মানিত হয়েছেন। বাঙালি জাতিও তেমনি সম্মানিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করতেন। আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী এবং এটা বঙ্গবন্ধু বারবার উচ্চারণ করতেন।
স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলেও তার মহান আদর্শ, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। প্রধানমন্ত্রী মানুষের মুক্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় মূল বক্তা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক বীর প্রতীক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। জুলিও কুরি পুরস্কার গ্রহণকালে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা পাঠ করেন রাষ্ট্রাচার প্রধান আমানুল হক।
সভায় সংযুক্ত ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী এবং বাংলাদেশের দূতাবাস প্রধানরা। এছাড়া বক্তৃতা করেন বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির মূখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বিশ্বশান্তি পরিষদ-বাংলাদেশ অংশের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু। এ সময় ‘শান্তির দূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শিরোনামে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।