ধর্ম ও জীবন

শাওয়াল মাসের আইয়ামে বিজের রোজা ২৬-২৮ মে

চন্দ্র মাসের মাঝামাঝি সময় তথা ১৩-১৫ তারিখ ৩ দিনের রোজাকে আইয়ামে বিজের রোজা বলা হয়। প্রত্যেক মাসে এ ৩ দিন রোজা রাখা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে প্রত্যেক মাসে এ রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়েকেরামকে এ রোজা রাখতে বলতেন।

হিজরি মাসের হিসেবে (১৪৪২ হিজরির) চলতি শাওয়াল মাসের ১৩-১৫ তারিখ হলো- বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার রোজার রাখার নির্ধারিত দিন। যারা এ তিন দিন রোজা রাখবে তাদের জন্য ২৫ মে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সাহরি খেতে হবে।

চলতি শাওয়াল মাস হলো রমজান পরবর্তী মাস এবং হজের মাসসমূহের আগের মাস। এমনিতেই শাওয়াল মাসের রোজার রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ রমজানের রোজা পালন করে এ মাসে ৬টি রোজা রাখলেই সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাওয়া যাবে।

মধ্য শাওয়ালে ৩ দিন রোজা রাখবে, তারা আর ৩টি রোজা রাখলেই পাবে শাওয়ালের ৬ রোজা রাখার মাধ্যমে বছরজুড়ে রোজা রাখার সাওয়াব। তবে রোজা রাখার সময় শাওয়ালের রোজার নিয়ত করতে হবে।

আইয়ামে বিজের রোজার রাখার নির্দেশ, বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের জন্য প্রত্যেক আরবি মাসের মধ্যভাগে ৩ দিন রোজা রাখার তাগিদ দিয়েছেন। সে হিসেবে এ (রজব) মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ (তের, চৌদ্দ ও পনের ) তারিখ হলো ২৬, ২৭ ও ২৮ মে মোতাবেক বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার।

আইয়ামে বিজের রোজা রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে ঘোষণা করেছেন-

> হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখল; সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ অতঃপর এর সমর্থনে আল্লাহ তাআলা তাঁর কিতাবে নাজিল করেন-

‘যে একটি নেকি নিয়ে আসে তার জন্য রয়েছে তার ১০গুণ।’ অতএব একদিন ১০ দিনের সমান।’ (তিরমিজি)

> হজরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোজা রাখতেন।’ (আবু দাউদ)

> হজরত ইবনু মিলহান আল-ক্বাইসি তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আইয়ামে বিজের রোজার ব্যাপারে নসিহত করেছেন; আমরা যেন তা (মাসের) ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ পালন করি। তিনি আরও বলেছেন, এটা সারা বছর রোজা রাখার মতোই।’ (আবু দাউদ)

এছাড়াও আইয়ামে বিজের রোজা সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে-

হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম বেহেশতের নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার পর তাদের শরীর থেকে জান্নাতি পোশাক চলে যায়। আর তাদের শরীরের রংও কুৎসিত হয়ে যায়। অতঃপর হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে চন্দ্র মাসের তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখে রোজা রাখলে আবার তাদের শরীরের রং পূর্বের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে যায়। তাই এই তিন দিনকে আইয়্যামে বিজ বা উজ্জ্বলতার দিন বলা হয়।

আইয়ামে বিজের রোজা রাখার ফজিলত বর্ণনায় হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিমে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোজা পালন, সারা বছর রোজা পালনের সমান।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজের রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − eleven =

Back to top button